
আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে, দায় স্বীকার ইসলামিক স্টেটের
বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। তাঁর দাবি ছিল, এই হামলার জন্য দায়ী তালিবানরাই।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তখন বেলা ১১টা। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বইমেলায় ভিড় জমেছে। ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও বাইরে থেকে বহু প্রকাশকদের জমায়েতও হয়েছে। আচমকাই বিকট বিস্ফোরণ ক্যাম্পাসে। ছিটকে পড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলেন বহু মানুষ। জখম অনেক। আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা হয়েছে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রশাসন সূত্রে খবর এমনটাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। তাঁর দাবি ছিল, এই হামলার জন্য দায়ী তালিবানরাই। মার্কিন হামলায় হেলমন্দে তালিবানরা কোণঠাসা হওয়ার পরেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই কাবুলে হামলা চালানো হয়েছে। তবে তালিবানরা এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। পরে কাবুল প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এই জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট।
আফগান-ইরানিয়ান বইমেলার আয়োজন হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইরান থেকে অনেক অতিথিরাও হাজির ছিলেন। এসেছিলেন বিদেশি প্রকাশকরাও। জঙ্গি হামলায় তাঁদের অনেকেই আহত বলে মনে করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসে ঢুকে নিজেকে উড়িয়ে দেয় এক জঙ্গি। বোমে ঠাসা জ্যাকেট ছিল তার পরনে। এই বিস্ফোরণের পরে আতঙ্কে সকলে দৌড়োদৌড়ি শুরু করলেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে আরও দুই জঙ্গি। গুলিতে প্রাণ গিয়েছে অনেকের।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখমাত্র তারিক আরিয়ান বলেছেন, জঙ্গির বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই জখম হন অনেকে। গুলির শব্দ পেয়ে ভয় আর আতঙ্কে দৌড়োদৌড়ি শুরু হয়ে যায়। তবে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ঘিরে ফেলে নিরাপত্তারক্ষীরা। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয়।
কাবুলের স্থানীয় টিভি চ্যানেল টোলো ও আরিয়ানা জানিয়েছে, আফগান-ইরানিয়ান বইমেলায় হামলা চালানোই লক্ষ্য ছিল জঙ্গিদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন ক্লাস চলছিল। অধ্যাপকরা জানিয়েছেন, আচমকাই গুলির শব্দ শোনা যায়। সেই সঙ্গে কান্নাকাটি, চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়।
“তখন ক্লাস চলছিল। গুলির শব্দে আমরা বাইরে এসে দেখি ক্যাম্পাসে কী ভয়ানক পরিস্থিতি। চারদিকে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে রয়েছেন অনেকে। আর এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে যাচ্ছে দুই বন্দুকবাজ,” বলেছেন ফ্রাইদুন আহমাদি নামে বছর তেইশের এক ছাত্র। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও অবধি ২২ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে ক্যাম্পাস থেকে। মৃতদের মধ্যে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। জখম আরও ২২। তবে মৃতের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছরই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় আটজনের। ২০১৬ সালে কাবুলের আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে জঙ্গি হামলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়।