
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর আওতায় মেয়াদ শেষের আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত নয়, হোয়াইট হাউসের নীতিনির্ধারকদের এমনটাই যুক্তি দিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। দেশ ও জাতির জন্য এটা যে খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করবে, তাও সাফ জানিয়েছেন তিনি। মোদ্দা কথা, হোয়াইট হাউস থেকে এই মুহূর্তে ট্রাম্পকে সরাতে গেলে পেন্সের যে সমর্থনের দরকার ছিল তা আর পাচ্ছে না ডেমোক্র্যাট শিবির। ক্যাপিটলে হিংসায় সমর্থন না করলেও ট্রাম্পের বিরোধিতা করতে রাজি হননি মাইক পেন্স।
২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। তার আগেই ট্রাম্পকে পাকাপাকিভাবে হোয়াইট হাউস থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা হয়েছিল। আজই ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হবে বলে খবরও জানানো হয়েছিল। এই ব্যাপারে পেন্সের সমর্থন চাওয়া হয়েছিলে। তবে পেন্স রাজি না হওয়ায় ক্রমাগতই তাঁর ওপর চাপ বাড়াচ্ছিলেন ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন হাউসের প্রতিনিধিরা।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব নিয়ে এখনও অবধি দুটি প্রস্তাব জমা পড়েছে মার্কিন কংগ্রেসে। প্রথমত, মেয়াদ শেষের আগেই ট্রাম্পকে যাতে সরিয়ে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স যাতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর আওতায় ক্যাবিনেটের কাছে এই প্রস্তাব রাখেন সেই চেষ্টাও শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। এখানে ভোটাভুটির মাধ্যমে ইমপিচ করা হবে ট্রাম্পকে।
তবে মাইক পেন্স জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টে রাজি নন। হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে পেন্স বলেন, “প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হতে আর আট দিন বাকি। আপনারা এখন চাইছেন আমি ২৫তম অ্যামেন্ডমেন্টে ট্রাম্পকে বিতাড়িত করার প্রক্রিয়ায় যোগ দিই। আমি মনে করি, এটা দেশ ও জাতির জন্য ভাল দৃষ্টান্ত নয়।”

ক্যাপিটল হিলে অরাজকতা তৈরির পরে শেষমেশ বাইডেনের জয় স্বীকার করেছিলেন ট্রাম্প। ক্যাপিটল হিলে তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছিল, বাইডেন ৩০৬-২৩২ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এর ফলে ট্রাম্প বা তাঁর সমর্থকরা আর বাইডেনের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন না। ক্যাপিটল হিলে ঘোষণার পরে ট্রাম্প বিবৃতি দিয়ে বলেন, তিনি চান আইনসম্মত পথে ক্ষমতার হস্তান্তর হোক। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, রাজনীতি থেকে সরছেন না। ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া নিয়েও ট্রাম্প যে উদ্বিগ্ন নন সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে অন্তত দুই তৃতীয়াংশ সেনেটরকে দাঁড়াতে হবে। একজন সেনেটের ম্যানেজার হবেন যিনি ইমপিচমেন্টের সপক্ষে যুক্তি দেবেন। সেনেটে এমনিতেই রিপাবলিকান সদস্য সংখ্যা বেশি। ডেমোক্র্যাটদের তাই নিজেদের সপক্ষে রিপাবলিকান সেনেটের সম্মতি জোগাড় করতে হবে। যেটা এখনও অবধি কঠিন কাজ।
বেশিরভাগ পর্যবেক্ষকের ধারণা, ট্রাম্প সেনেটে রেহাই পেয়ে যাবেন। একমাত্র রিপাবলিকান পার্টির ৫৩ জন সেনেট সদস্যের মধ্যে ২০ জন যদি দলীয় আনুগত্য ভুলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তবেই তাঁর শাস্তি হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়।