
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিল্লিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালি চলাকালীন সংঘর্ষের ঘটনায় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করল দিল্লি পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় উস্কানি দেওয়া ও যুক্ত থাকার অভিযোগে ২৫টি বেশি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০০ জনকে আটক ও অন্তত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিন দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে অনেক দফা আলোচনার পরেই এই ট্র্যাক্টর র্যালির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কোন রাস্তা দিয়ে মিছিল যাবে, বা কীভাবে মিছিল যাবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও নির্দিষ্ট রাস্তা ভেঙে অন্য রাস্তা দিয়ে গিয়েছে মিছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ৩০০-র বেশি পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতির দায় সম্পূর্ণভাবে কৃষকদের বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে ট্র্যাক্টর মিছিলের পরদিনই কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে। কিষাণ সংঘর্ষ কমিটির নেতা ভি এম সিং বলেছেন, “এই বিক্ষোভে এমন কেউ কেউ আছেন যাঁদের উদ্দেশ্য অন্য। আমরা তাঁদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারি না।” ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের একটি অংশও আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। তাদের বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে।
মঙ্গলবার কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হিংসার সাক্ষী থেকেছে রাজধানী দিল্লি। বিক্ষোভকারীদের একাংশ ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন। তাঁদের হাতে ছিল লাঠি ও পতাকা। ‘নিশান সাহিব’ নামে একটি ধর্মীয় পতাকা তাঁরা লালকেল্লায় উড়িয়ে দেন। লালকেল্লার অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে তাড়া করেন।

বুধবার ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা ঠাকুর ভানুপ্রতাপ সিং বলেন, “গতকাল দিল্লিতে যা ঘটেছে, তাতে আমি মর্মাহত। আমি এখনই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে চাই।” ভানুপ্রতাপ সিং-এর অনুগামীরা চিল্লা সীমান্তে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের এদিন চলে যেতে দেখা যায়।
এদিন কৃষক নেতারা সমর্থকদের উদ্দেশে সংযত থাকার আবেদন জানান। এদিন দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে তাঁরা সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের বক্তব্য, এখনই অধৈর্য হয়ে লাভ নেই। আন্দোলন এখনও অনেকদিন ধরে চলবে।
কৃষক নেতাদের একাংশ লালকেল্লার ঘটনার জন্য পাঞ্জাবের গায়ক, অভিনেতা তথা সমাজকর্মী দীপ সিধুকে দায়ী করেছেন। এক কৃষক নেতা বলেন, “দীপ সিধু সরকারের লোক। এই ষড়যন্ত্রটা আমাদের বোঝা দরকার।” পরে তিনি বলেন, “দীপ সিধু সর্দার নয় গদ্দার।”
অন্যদিকে দীপ সিধু ফেসবুকে পোস্ট করে বলেন, তাঁরা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেননি। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসাবে ‘নিশান ই সাহিব’ পতাকা লাগিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “আমরা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানানোর জন্য নিশান সাহিব ও কৃষক সংগঠনের পতাকা লাগিয়েছিলাম। জাতীয় পতাকার অবমাননা করিনি। আমরা কিষাণ-মজদুর একতা নিয়ে স্লোগানও দিয়েছিলাম।”
এই ঘটনা নিয়ে এবার পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করল দিল্লি পুলিশ।