
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবার ১৬ জানুয়ারি বৃহত্তম টিকাকরণ কর্মসূচী শুরু হতে চলেছে দেশে। তিন হাজার টিকাকরণ কেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে। টিকাকরণের সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল বলেছেন, বিশ্বের বৃহত্তম টিকাকরণ কর্মসূচী হবে দেশজুড়ে। তার জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রথম দিনে তিন লাখ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হবে।
টিকাকরণের জন্য সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন পাঠানো হয়েছে রাজ্যে রাজ্যে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে, প্রতিটি স্পটে নির্দিষ্ট সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মীকেই টিকা দিতে হবে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশিজনের নাম নথিভুক্ত করা যাবে না। প্রতিটি স্পটে ১০০ জন করে স্বাস্থ্যকর্মী টিকার প্রথম ডোজ পাবেন। তার জন্য যে পরিমাণ টিকার ভায়াল দরকার, সেগুলো পরিমাণমতো পাঠিয়ে দেওয়া হবে কেন্দ্রগুলিতে।
প্রাথমিকভাবে সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকেই ভ্যাকসিন সেশন সাইট হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলিও টিকাকরণের প্রস্তাব জমা করছে। সেখানকার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে অনুমতি দেবে সেইসব রাজ্যের সরকার।
আরও পড়ুন: টিকা কীভাবে নিতে হবে, কতদিনে তৈরি হবে অ্যান্টিবডি, কারা পাবেন, বিস্তারিত বললেন এইমস প্রধান
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন, সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড টিকা ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন-স্পটগুলিতে। এখনও অবধি দুই কোম্পানির ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টিকার ডোজের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ১ কোটি ১০ লক্ষ সেরামের কোভিশিল্ড ও ৫৫ লক্ষ কোভ্যাক্সিন টিকার ডোজ পৌঁছে দেওয়া হবে রাজ্যগুলিতে। প্রাথমিক পর্যায়ে হায়দরাবাদ থেকে কোভ্যাক্সিন টিকার ২.৪ লাখ ডোজ চলে এসেছে দিল্লিতে। ১২ টি রাজ্যের সেই ডোজ বন্টন করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় সরকার আগেই জানিয়েছে ৩০ কোটিকে প্রথম দেওয়া হবে টিকা। যার মধ্যে প্রথমে থাকবেন ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও ডাক্তারি পড়ুয়ারা। এর পরে টিকা পাবেন পুলিশ, প্রশাসন, মিউনিসিপ্যালিটির কর্মীরা। তৃতীয় ক্যাটেগরিতে রাখা রয়েছে ২৬ কোটি মানুষকে, যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি। চতুর্থ ক্যাটেগরিতে থাকবে কোমবির্ডিটির রোগীরা এবং ৫০ বছরের কমবয়সী যাদের ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো রোগ রয়েছে, তাঁরাও থাকবেন হাই-রিস্ক গ্রুপে।
টিকার অগ্রাধিকার যাঁরা পাবেন তাঁদের নাম নথিভুক্ত করতে হলে আইডি প্রুফ আগে দিতে হবে। নিজের পাসপোর্ট সাইজের ফটো, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট জব কার্ড, প্যান কার্ড, পাসবুক (ব্যাঙ্ক/পোস্ট অফিস), পাসপোর্ট, পেনশন ডকুমেন্ট, যেখানে চাকরি করেন সেখানেকার আইডি কার্ড, ভোটার কার্ড ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। টিকা নেওয়ার আগে তাদের মোবাইলে এসএমএস আসবে। সেখানে টিকা নেওয়ার দিন ও জায়গা বলা থাকবে।
যাঁদের টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের কাছে এসএমএস যাবে। মোট ১২ টি ভাষায় এসএমএস পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ দেওয়ার পরে একটি কিউ আর কোড নির্ভর সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। সেই সার্টিফিকেট মোবাইলে রাখা যাবে। এছাড়া যাঁরা ভ্যাকসিন নেবেন, তাঁদের সম্পর্কে ডিজি লকার নামে এক ডকুমেন্ট স্টোরেজ অ্যাপে। সেই সঙ্গে থাকবে হেল্পলাইন। তা সপ্তাহের সাতদিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে।
টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিনের মাথায় দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। ২৮ দিন অন্তর দুটি ডোজ সম্পূর্ণ হওয়ার দু’সপ্তাহ অর্থাৎ ১৪ দিন পর থেকে রক্তরসে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে শুরু করবে। একটি ডোজ নেওয়ার পরে দ্বিতীয় ডোজ না নিলে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে না। আর মাঝের ২৮ দিন সাবধানে থাকতে হবে। এই সময়ের মধ্যে অধিক মেলামেশা করা বা করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।