
জম্মুতে জইশ এনকাউন্টারে মাসুদ যোগ! নাশকতার ছক সাজিয়েছিল মৌলানার ভাই
পাকিস্তান থেকে মৌলানা আর তার ভাই নাকি উপত্যকায় নাশকতা ছড়ানোর কলকাঠি নেড়ে যাচ্ছে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা জানাচ্ছে, নাগরোটা টোল প্লাজার কাছে যে চার জইশ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে তাদের দিয়ে বড়সড় হামলার ছক কষেছিল মৌলানার ভাই মুফতি রউফ আসগর।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে হামলার নেপথ্যে ছিল জইশ মাথা মাসুদ আজহার। ভারতীয় গোয়েন্দারা এমনটাই দাবি করেছিলেন। এ বছর জুন মাসে পুলওয়ামার কায়দায় ফের গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের যে ছক বানচাল করে দিয়েছিল সেনাবাহিনী সেখানেও ছিল মাসুদেরই ষড়যন্ত্র। পাকিস্তান থেকে মৌলানা আর তার ভাই নাকি উপত্যকায় নাশকতা ছড়ানোর কলকাঠি নেড়ে যাচ্ছে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা জানাচ্ছে, নাগরোটা টোল প্লাজার কাছে যে চার জইশ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে তাদের দিয়ে বড়সড় হামলার ছক কষেছিল মৌলানার ভাই মুফতি রউফ আসগর। জঙ্গিদের থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল নেটওয়ার্ক ঘেঁটে এমনই সূত্র পাওয়া গেছে।
নাগরোটার বান টোল প্লাজার কাছে অস্ত্র বোঝাই ট্রাক সমেত ধরা পড়ে চার জইশ জঙ্গি। শুরুতে ট্রাকের ভেতর থেকে পুলিশের ভ্যান লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় তারা। দুই পুলিশখর্মী জখম হন। এরপরেই জঙ্গি ধরতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সেনাবাহিনী। তিন-চার ঘণ্টা তুমুল গুলির লড়াইয়ের পরে খতম হয় চারজনই।
সেনা সূত্র জানাচ্ছে, ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি জঙ্গিদের কাছ থেকে ১১টি আধুনিক একে সিরিজ রাইফেল মিলেছে যা পাকিস্তানে তৈরি বলেই মনে করা হচ্ছে। ৩০টি চিনা গ্রেনেড ও ২০ কিলোগ্রাম আরডিএক্স বাঁধা ছিল তাদের শরীরে। প্রয়োজনে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানোর নির্দেশও তাদের দেওয়া ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা অফিসাররা বলছেন, এই চার জঙ্গি পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের। সেখানে তাদের আত্মঘাতী প্রশিক্ষণ দিয়েছে মৌলানার ভাই মুফতি রউফ আসগর ও জইশের অপারেশনাল কম্যান্ডার কোয়ারি জারার। এই চার জঙ্গিই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছিল বড়সড় নাশকতা চালানোর জন্যই। গোয়েন্দাদের অনুমান, জঙ্গিরা শাকারগড় থেকে সাম্বা সেক্টর হয়ে ভারতে ঢুকেছিল।
জঙ্গিদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও জিপিএস ডিভাইস পাওয়া গেছে যার লিঙ্ক রয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে। গোয়েন্দারা বলছেন, রউফ আসগরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল চার জঙ্গির। তাদের কাছ থেকে ডিজিটাল মোবাইল রেডিও গেছে যাতে মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স নামে একটি সংস্থার নাম রয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই সংস্থা পাকিস্তানেরই। উপত্যকার হাল হকিকত কী, প্ল্যান মাফিক কাজ কতটা হল ইত্যাদি বার বার জানতে চাওয়া হয়েছে জঙ্গিদের কাছে। পাকিস্তানের কোনও জঙ্গি ঘাঁটি থেকেই তথ্য আদানপ্রদান হত বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
নাগরোটা এনকাউন্টারের পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, বিদেশ সচিব হর্ষ শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ২৬ নভেম্বর ফের মুম্বই হামলার মতোই নাশকতার চেষ্টায় ছিল জঙ্গিরা। আগে থেকেই খবর দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। জঙ্গিদের সব ছক ভেস্তে দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ফের একবার উপত্যকায় নিজেদের দক্ষতা ও সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছেন সেনা জওয়ানরা।