
দ্য ওয়াল ব্যুরোঃ অসম ও মিজোরামের সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত এলাকা। এই পরিস্থিতিতে শান্তি ফেরাতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছে দুই রাজ্যই। এমনকি দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ফোনে কথাও হয়েছে। এই সংঘর্ষে অসমের কাছার জেলা ও মিজোরামের কোলাসিব জেলার অনেক বাসিন্দা আহত হয়েছেন বলে খবর।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল এই বিষয়ে রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতরকে জানিয়েছেন। তিনি মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গার সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন। সীমান্ত এলাকায় সমস্যা মেটাতে যৌথ উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন তিনি, এমনটাই অসম সরকারের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে জোরামথাঙ্গা আশ্বাস দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফেরাতে চান তাঁরাও।
অন্যদিকে মিজোরাম সরকারের তরফেও কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানো হয়েছে পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য। এই বিষয়ে একটি মন্ত্রিসভার বৈঠকও করেছে মিজোরাম। এই গণ্ডগোলের জন্য অবশ্য অসমের উপরেই দায় চাপিয়েছে তারা।
মিজোরামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালচামলিয়ানা জানিয়েছেন, সোমবার দুই রাজ্যের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে দুই রাজ্যের মুখ্যসচিবরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া কেন্দ্রের তরফে স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় কুমার ভল্লা উপস্থিত থাকবেন।
এই মুহূর্তে উত্তপ্ত এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছে দু’রাজ্যই। মিজোরামের ভাইরেংটে গ্রাম ও অসমের লাইলাপুর এলাকায় এই নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছে। তার ফলে মিজোরামের দিকে যাওয়ার পথে কয়েকশ ট্রাক এই মুহূর্তে সীমান্তে আটকে রয়েছে।
গণ্ডগোলের সূত্রপাত শনিবার। অসমের বাসিন্দারা অভিযোগ তোলে তাদের দিকে মিজোরাম সরকার একটি কোভিড ১৯ নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্র বানিয়েছে। মিজোরামের দিকে যে ট্রাক চালক ও অন্যান্যরা যাচ্ছে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে সেখানে। অসম সরকারকে না জানিয়েই এই পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তারা।
জানা গিয়েছে, এর পরেই মিজোরামের দিক থেকে কিছু যুবক এসে লাইলাপুরে কিছু ট্রাক চালককে মারধর করে। ১৫ টি দোকান ও বাড়িতে তারা আগুন ধরিয়ে দেয় বলে খবর। তারপরেই সংঘাত চরমে ওঠে। পাশের করিমগঞ্জ জেলাতেও তা ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তারক্ষী বাড়াতে বাধ্য হয় দুই রাজ্য।
এই ঘটনার পরে দক্ষিণ অসম রেঞ্জের ডিজিপি দিলীপ কুমার দে বলেছেন, “কাছার ও করিমগঞ্জে অসমের সীমানার মধ্যে এসেছে মিজোরাম পুলিশ। লাইলাপুরে অসমের সীমান্তের দেড় কিলোমিটার ভিতরে তারা একটা নাকা তল্লাশি চালানোর গেট তৈরি করার চেষ্টা করেছে। আমরা এর বিরোধিতা করেছি। করিমগঞ্জে ওরা আড়াই কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে এসেছে। আমাদের বাহিনীও মোতায়েন রয়েছে।”
অবশ্য শুধু অসম নয়, আর এক প্রতিবেশী ত্রিপুরার সঙ্গেও সীমান্ত সংঘাত হয়েছে মিজোরামের। সীমান্ত এলাকায় ফুলডুংসাই গ্রামের অধিকার নিয়ে দুই রাজ্যের মধ্যে বিবাদ অনেক দিনের। সম্প্রতি সেখানে একটি মন্দির সারাইকে কেন্দ্র করে তা আরও বেড়েছে। সেখানেও কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের দাবি করা হয়েছে।