
রুশ টিকার ১০ কোটি ডোজ তৈরি করছে ভারত, উৎপাদন শুরু একুশেই
ভারতে রাশিয়ার টিকা তৈরি করবে হায়দরাবাদের জনপ্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরি। আরডিআইএফ ও রেড্ডিসের মধ্যে চুক্তি হয়েছে একুশ সাল থেকেই টিকার ১০ কোটি ডোজ তৈরি শুরু হয়ে যাবে।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাশিয়ার টিকার ট্রায়াল শুরু হয়েছে দেশের নানা জায়গায়। হায়দরাবাদ, গুজরাটে তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। ডিসেম্বর থেকে কলকাতায় হাজার জনের উপর টিকার ট্রায়াল হবে। আগামী বছর থেকেই বিপুল উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে ভারতে। রাশিয়ার ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (আরডিআইএফ) সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এমনটাই।
ভারতে রাশিয়ার টিকা তৈরি করবে হায়দরাবাদের জনপ্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরি। আরডিআইএফ ও রেড্ডিসের মধ্যে চুক্তি হয়েছে একুশ সাল থেকেই টিকার ১০ কোটি ডোজ তৈরি শুরু হয়ে যাবে। সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট দেখে দেশের ভ্যাকসিন রেগুলেটারি কমিটি অনুমতি দিলে প্রথম ধাপেই বিপুল পরিমাণ ডোজ বাজারে চলে আসবে।
ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের মতো ব্যবস্থা নেই ভারতে। কারণ সে টিকার ভায়াল মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখতে হয়, দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলিতে এই ব্যবস্থা এখনও হয়নি। কাজেই ফাইজারের টিকা ভারতে আসবে কিনা সে নিয়ে সংশয় আছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন আগেই বলেছেন, ফাইজারের টিকা না এলেও ক্ষতি নেই। দেশেই পাঁচ রকমের টিকার ট্রায়াল চলছে যার মধ্যে একটি রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি টিকা। সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ডের টিকা, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন এবং স্পুটনিক ভি এই তিন টিকাই তৃতীয় পর্বের ট্রায়ালে রয়েছে। সব ঠিক থাকলে দেশের বাজারে এই তিন টিকাই সবচেয়ে আগে চলে আসবে।
রাশিয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের টিকা ৯০ শতাংশ কার্যকরী ঘোষণা করার পরেই রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট দাবি করে স্পুটনিক ভি টিকা ৯২ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। ১৮ জুন থেকে টিকার ট্রায়াল শুরু করে গ্যামেলিয়া। ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবককে দুটি দলে ভাগ করে টিকা দেওয়া হয়। প্রথম ৩৮ জনকে লিকুইন ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করা হয়, বাকি ৩৮ জনকে টিকার পাউডার দেওয়া হয়। অক্সফোর্ডের মতো অ্যাডেনোভাইরাসের দুর্বল স্ট্রেনকে ভেক্টর হিসেবে ব্যবহার করে টিকা তৈরি করেছে রাশিয়া। টিকার ট্রায়ালের রিপোর্ট এনে রুশ কোম্পানি দাবি করেছে, এই টিকার ডোজে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে স্বেচ্ছাসেবকদের। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো ইমিউন পাওয়ার তৈরি হচ্ছে শরীরে।
ভারতেও এই টিকার ট্রায়াল ও উৎপাদনের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল রাশিয়া। পরে ভারতের প্রথম সারির ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হায়দরাবাদের ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবকে টিকার ডোজ বিক্রি করে রাশিয়ার ভ্যাকসিন বিতরণের দায়িত্বে থাকা ডাইরেক্ট ইনভেস্ট ফান্ড (আরডিআইএফ)। প্রাথমিকভাবে যা কথা হয়েছে তাতে ১০ কোটি টিকার ডোজের জন্য রেড্ডি’স-এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে গ্যামেলিয়ার।