
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাকিস্তানের জইশ শিবির থেকে প্রায় ১৫০ ফুট লম্বা টানেল চলে এসেছে নিয়ন্ত্রণরেখার এ পারে। এই সুড়ঙ্গ ধরে হামাগুড়ি দিয়েই উপত্যকায় ঢুকছে জঙ্গিরা। নাগরোটা এনকাউন্টারে যে চার জইশ জঙ্গিকে খতম করেছে ভারতীয় সেনা, তারাও এসেছিল এই পথ ধরেই। প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করলেন বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল রাকেশ আস্তানা।
পাক সীমান্তে সাম্বা ও রাজৌরি সেক্টরে কড়া পাহাড়া বসানো হয়েছে। সুড়ঙ্গ পথের সঙ্গে এই দুই সেক্টরের যোগ রয়েছে বলেই দাবি। আস্তানা জানিয়েছেন, এই সুড়ঙ্গ পথ পাকিস্তানের জইশ ক্যাম্প অবধি গিয়েছে। জইশ শিবির থেকে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই পথেই ভারতে পাঠানো হচ্ছে বলে সন্দেহ। জইশেরই কোনও অপারেশনাল কমান্ডার রয়েছে যে সুড়ঙ্গ থেকে জঙ্গিদের নিরাপদে বের করে উপত্যকার গোপন ঘাঁটিগুলিতে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
১৭৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট রাথোর বলেছেন, এই সুড়ঙ্গে ঢুকে খাবারের প্যাকেট জলের বোতল পাওয়া গেছে। বিস্কুট, কেক ইত্যাদির প্যাকেট পাওয়া গেছে যেগুলি পাকিস্তান থেকে কেনা হয়েছে। কয়েকটি খাবারের প্যাকেটে তারিখ লেখা আছে মে মাস ২০২০। মনে করা হচ্ছে, সেই সময়েও সুড়ঙ্গ ধরে উপত্যকায় ঢুকেছিল জঙ্গিরা।
বিএসএফ প্রধান আস্তানা বলছেন, শাকারগড়ের জইশ ক্যাম্প থেকে এই পথেই সাম্বা সেক্টরের মাওয়া গ্রামের দিকে এসেছিল জঙ্গিরা। এই মাওয়া গ্রাম হল রামগড় ও হিরানগর সেক্টরের মাঝে। তাদের পিকআপ পয়েন্ট ছিল জাটওয়াল গ্রাম। সম্ভবত সেখানেই জইশের কোনও অপারেশনাল কম্যান্ডার হাজির ছিল যে চার জঙ্গিকে উপত্যকায় ঢোকার রাস্তা দেখিয়েছিল। অস্ত্রসমেত ট্রাকে চেপে জম্মুর কোনও জইশ শিবিরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের। তবে তার আগেই ধরা পড়ে যায় জঙ্গিরা। এই ছক ভেস্তে দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
চিনে তৈরি প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গেছে জঙ্গিদের কাছে। গ্রেনেড, চাইনিজ ব্ল্যাক স্টার পিস্তল, রাইফেল, নাইট্রোসেলুলোজ বিস্ফোরক ইত্যাদি। এই ধরনের বিস্ফোরক গত বছর পুলওয়ামা সেনা কনভয়ে হামলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
বিএসএফ জানাচ্ছে, নাগরোটা এনকাউন্টারের পরে নিরাপত্তায় সুরক্ষা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ৩৪৩.৯ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে সেনার সংখ্যা প্রায় তিনগুণ করা হয়েছে। ভারতীয় বাহিনীর তিনটি ব্যাটেলিয়ন দিবারাত্র সীমান্তে নজর রেখে বসে আছে। সেনাদের হাতেও রয়েছে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। রাতের অন্ধকারে চোরাগোপ্তা পথে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে উন্নতমানের ক্যামেরা ও সেন্সর বসানো হয়েছে। সীমান্তের ওপার থেকে ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গেই টের পেয়ে যাবেন সেনা জওয়ানরা।