
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্যাঙ্গং লেক থেকে সরে গেলেও পুরোপুরি সেনা তোলেনি চিন। বরং প্যাঙ্গং থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে রুটগ ঘাঁটিতে নতুন করে কাঠামো বানাতে দেখা গেছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মিকে। নতুন উপগ্রহ চিত্র দেখিয়েছে, রুটগ বেসে ছোট ছোট ঘর তুলছে চিনের সেনা। সেখানে সামরিক সরঞ্জাম রাখার ব্যবস্থাও আছে। এই রুটগ ঘাঁটি থেকে প্যাঙ্গংয়ের ওপর নজরদারি করাও যায়। কাজেই প্রয়োজন হলে চিনের বাহিনী যে ফের তাদের সীমা পেরিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাতে পারে, এ ধারণা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না পর্যবেক্ষকরা।
প্যাঙ্গং সো রেঞ্জ থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে রুটগ বেস চিনের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় পড়ে। মলডো থেকে যার দূরত্ব প্রায় ১১০ কিলোমিটার। ২০১৭ সালে ডোকলামে চিন ও ভারতের সেনা প্রায় ৭২ দিন মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পরে সে ডোকলাম নিয়ে সমস্যা মিটলেও এর পরে একাধিকবার ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন অংশে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেছে চিনের বাহিনী। ২০১৯ সাল থেকে রুটগ বেসে সক্রিয়তা বাড়ে চিনের সেনার। সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করতেও দেখা যায়। এমনকি, রুটগ বেসে আধুনিক রাডার স্টেশন বানিয়েছে লাল ফৌজ। ট্যাঙ্ক ড্রিল, হেলিপ্যাড ও সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ছোড়ার লঞ্চ প্যাডও আছে।

প্রতিরক্ষা সূত্র বলছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তি মাফিক কোনও দেশের সেনাই বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হতে পারে না। আঞ্চলিক সীমান্তগুলির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য চুক্তিবদ্ধ দুই দেশই। কিন্তু চিনের বাহিনী সে চুক্তি বারে বারেই লঙ্ঘণ করেছে। গালওয়ানের সংঘাত তার অন্যতম বড় প্রমাণ। সেনা ঢুকিয়ে জোরজবরদস্তি আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা সম্ভব নয় বুঝেই চিন ঘুরপথে একটু একটু করে সীমান্তে তাদের শক্তি বাড়িয়ে চলেছে। শুধু রুটগ ঘাঁটি নয়, ভারতের সীমান্ত বারবর এমন অনেক জনপদ তৈরি করে রেখেছে চিন, যেখানে সেনাদের বসবাস করা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন রাখার মতো ব্যবস্থা রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, চিনের স্ট্র্যাটেজি হল ‘বর্ডার ডিফেন্স ভিলেজ।’ এই সব গ্রামগুলিতে সেনা বাঙ্কার তৈরি হবে। অস্ত্রশস্ত্র মজুত করে রাখা হবে। সীমান্তের হালহকিকতের খবর যাবে পিপলস লিবারেশন আর্মির কাছে। সীমান্তে ভারতের সেনা বিন্যাস কেমন, তার গোপন খবরও চলে যাবে চিনের কাছে।