
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গতকালই দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, নেতা রাহুল গান্ধী, পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া প্রমুখ। তার ২৪ ঘণ্টা পরেই চার রাজ্যে সংগঠনে বদল শুরু করল দল। এই চার রাজ্য হল তেলেঙ্গানা, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র।
হায়দরাবাদের পুর ভোটে খারাপ ফলের দায় নিয়ে তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সভাপতি উত্তম কুমার রেড্ডি পদত্যাগ করেছেন। গুজরাতের উপনির্বাচনেও খারাপ ফলের দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন সেখানকার কংগ্রেস সভাপতি অমিত চাবদা। শনিবারই মুম্বই আঞ্চলিক কংগ্রেস কমিটিতে বদল এনেছে দল। মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতি বালাসাহেব থোরাটকে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কংগ্রেসের নেতাও করা হয়েছে।
কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির তিন সেক্রেটারিকে অসম ও কেরলের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী বছর এই দুই রাজ্যে নির্বাচন। তার আগে তাঁরা অসমের দায়িত্বে থাকা জিতেন্দ্র সিং ও কেরলের দায়িত্বে থাকা তারিক আনোয়ারকে সংগঠন আরও মজবুত করতে সাহায্য করবেন।
গতকাল ১০ জনপথে বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পবন বনশল জানিয়েছেন, বৈঠকে রাহুল বলেন, “আপনারা সবাই চাইছেন বলে আমি দলের হয়ে কাজ করতে তৈরি।” কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি নাকি এও বলেছেন, বুথ স্তরে সংগঠনকে মজবুত করার জন্য আরও বেশি যোগাযোগ গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বৈঠকে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া বলেন, তৃণমূল স্তরে কর্মীদের খেয়াল রেখে নতুন করে ফের সংগঠনকে মজবুত করে গড়ে তুলতে হবে তাঁদের। বৈঠকে নাকি বিক্ষুব্ধ নেতারা কেউই রাহুলের সমালোচনা করেননি। বরং তাঁরা তাঁকে সমর্থন করেছেন বলেই জানা গিয়েছে।
উনিশের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পরে সভাপতির দায়িত্ব ছেড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তাঁর বক্তব্য ছিল গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে কেউ কংগ্রেস সভাপতি হন। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে অন্তর্বর্তী সভানেত্রীর দায়িত্ব নিতে হয় সেই সনিয়া গান্ধীকেই। কিন্তু তিনি স্বাস্থ্যের কারণে বেশিদিন এই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। তাই নতুন সভাপতি নির্বাচনের সময় এসে গিয়েছে।
শুক্রবার কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, দলের ৯৯.৯ শতাংশ নেতারা চাইছেন ফের একবার সভাপতির দায়িত্ব নেন রাহুল। কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত রাহুল নিজে নেবেন।
রাহুল নেতৃত্ব ছাড়ার পরে আরও খারাপ অবস্থা হয়েছে কংগ্রেসের। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশে সরকার পড়ে গিয়েছে। রাজস্থানেও টালমাটাল অবস্থার মধ্যে কোনও রকমে সরকার বাঁচিয়েছেন অশোক গেহলট।
গত ২৩ অগস্ট কংগ্রেসের ২৩ নেতা সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে বলেন, দলের ভাঙন রোধ করতে গেলে নেতৃত্বর আরও বেশি সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সেই চিঠি লেখার পর থেকে কংগ্রেসের মধ্যেই অনেক তাঁদের সমালোচনা করেন। এই বিষয়ে গান্ধী পরিবারের তরফেও এতদিন মুখ খোলা হয়নি। কিন্তু গতকাল তাঁরা সেই নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপরেই শুরু হয়েছে সংগঠনে এই রদবদল।