
দিল্লির তাণ্ডবে মৃত ৪২, আরও বাড়ার আশঙ্কা
বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের এলাকায় পাঁচটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে কংগ্রেস। তারা এলাকা ঘুরে সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে রিপোর্ট জমা দেবে। বাড়ির ছাদ থেকে পাথর ও পেট্রোল বোমা ছোড়ার অভিযোগে এফআইআর করা হয়েছে আম আদমি পার্টির কাউন্সিলর তাহির হুসেনের বিরুদ্ধে। তাকে বহিষ্কার করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আছে পাথর, ভাঙা কাঁচের টুকরো, জ্বলে-পুড়ে যাওয়া গাড়ির অংশ। বন্ধ দোকানপাঠ। স্তব্ধ এলাকা। তারমধ্যেই বুটের ভারী শব্দ। বারুদের গন্ধের মধ্যেই একের পর এক মিলছে দেহ। কখনও রাস্তার পাশে নালার মধ্যে থেকে, তো কখনও ধংসস্তূপের মধ্যে থেকে। কিন্তু মৃত্যুমিছিল থামছে না। দিল্লির হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২। এই সংখ্যা এখনও অনেক বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত রবিবার থেকে দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশে শুরু হয়েছে নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ। জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, ভজনপুরা, গোকুলপুরী, করওয়াল নগর প্রভৃতি এলাকা সংঘর্ষে বিধ্বস্ত। সব শেষে পাওয়া খবর অনুযায়ী এই সংঘর্ষে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩০০-র বেশি মানুষ আহত। গুলিবিদ্ধ হয়েছে ৮২ জন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মানুষদের মধ্যে কেউ কেউ মারা যাচ্ছেন। তেগবাহাদূর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। এলএনজিপি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। জেপি হাসপাতালে প্রাণ হারিয়েছেন ১ জন। কারও বা দেহ উদ্ধার হচ্ছে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে। তাই এই সংখ্যা কত বাড়বে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসা রুখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে। সিট-এর দুটি দল গঠন করা হয়েছে। একটি টিমের দায়িত্বে রয়েছে ডিসিপি জয় তিরকে। অন্য দলটির দায়িত্বে থাকছে ডিসিপি রাজেশ দেও। প্রতি টিমে থাকবেন চারজন এসিপি র্যাঙ্কের পুলিশ। এছাড়াও দিল্লি পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার (ক্রাইম) বিকে সিং সিটের এই দুই টিমের সমস্ত কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করবেন। দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে গত কয়েকদিনের অশান্তির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৪৮টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। ক্রমশ জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। বাড়ছে অশান্তির আঁচ। তাই সিটের এই দুটো টিমকে ইতিমধ্যেই সংঘর্ষের এলাকায় গিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি টিমের সঙ্গে থাকবেন তিনজন ইন্সপেক্টর, চারজন সাব-ইন্সপেক্টর এবং তিনজন কনস্টেবল। চাপের মুখে পড়ে দিল্লি পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন এসএন শ্রীবাস্তব। উত্তর-পূর্ব দিল্লি জুড়ে টহল দিচ্ছে ৭০০০ আধাসেনা।
বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের এলাকায় পাঁচটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে কংগ্রেস। তারা এলাকা ঘুরে সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে রিপোর্ট জমা দেবে। বাড়ির ছাদ থেকে পাথর ও পেট্রোল বোমা ছোড়ার অভিযোগে এফআইআর করা হয়েছে আম আদমি পার্টির কাউন্সিলর তাহির হুসেনের বিরুদ্ধে। তাকে বহিষ্কার করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই পরিস্থিতিতে সংঘর্ষ রুখতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছে। উল্টে এই ঘটনার জন্য সনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করেছে বিজেপি।