
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনার তৃতীয় ঢেউ ভয়ঙ্করভাবে ধাক্কা দিয়েছে রাজধানীতে। তরতরিয়ে বাড়ছে কোভিড রোগীর সংখ্যা। সংক্রমণের হার জাতীয় গড়ের থেকে বেশি। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজে তালা পড়ে গেছে। স্কুল ফের কবে খুলতে পারে এই প্রসঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া বলেছেন, করোনার টিকা না আসা অবধি দিল্লিতে স্কুল-কলেজ খোলার কোনও সম্ভাবনাই নেই। ঝুঁকি নেওয়া হবে না কোনওভাবেই।
৩০ অক্টোবর থেকেই স্কুল বন্ধ দিল্লিতে। সিসোদিয়া বলেছেন, সমস্ত স্কুল স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। বাচ্চাদের কোভিড টেস্টও করানো হয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কেউই ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে রাজি নয়। যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন চলে আসছে ততদিন অপেক্ষা করতেই হবে। এর পরে পরিস্থিতি বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
করোনা সংক্রমণ আচমকাই বাঁধ ভেঙেছে দিল্লিতে। দৈনিক সংক্রমণ রেকর্ড করেছে। একদিনে আক্রান্ত সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়েছে। চিন্তার কারণ হল, মাত্র এক সপ্তাহেই ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে। মোট সংক্রামিত পাঁচ লাখের বেশি। দিল্লি সরকার যদিও জানিয়েছে নতুন করে লকডাউন হবে না রাজধানীতে। তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রথমেই দিল্লির বাজারগুলি কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। কেন্দ্রের কাছে এই মর্মে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লির বাজারগুলি ক্রমেই করোনার হটস্পট হয়ে উঠছে। মাস্ক না পরে, সামাজিক দূরত্ব না মেনেই সেখানে ভিড় করছে লোকজন। সংক্রমণও তাই বেশিজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। রবিবার পশ্চিম দিল্লির ডিস্ট্রিক্ট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি একটি নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, পাঞ্জাবি বসতি বাজার ও জনতা বাজার আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে।
গত ১৫ নভেম্বর দিল্লিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ ঘোষণা করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, প্রতিদিন আরটি-পিসিআর টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও আইসিএমআরের যে মোবাইল ভ্যানগুলি শহরে ঘোরে তার সংখ্যাও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
এদিকে মাস্ক না পরলে দু’হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করেছে কেজরিওয়াল সরকার। দিল্লি সরকারের বক্তব্য, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের উদ্যোগে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট এখন বেশি হচ্ছে দিল্লিতে। মোবাইল ভ্যানে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নমুনা পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কোভিড সেন্টারগুলিতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। ছাত্তরপুরের সবচেয়ে বড় কোভিড সেন্টারে ১০ হাজার বেডের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে বেডের সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে। শীতের সময় ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে দিল্লিতে। তাই সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।