
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত-পাক সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় অশান্তি বাঁধিয়ে রেখেছে পাক সেনারা। এদিকে উপত্যকায় একের পর এক নাশকতা চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। গতকালই পুলওয়ামায় গ্রেনেড হামলা হয়েছে। জখম হয়েছেন ১২ জন সাধারণ মানুষ। আর আজ ভোর হতে না হতেই জম্মুর নাগরোটায় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দিচ্ছে সেনাবাহিনীও।
ভোর পাঁচটা। নাগরোটা টোল প্লাজার কাছে আচমকাই গুলি চালাতে শুরু করে দেয় সন্ত্রাসবাদীরা। পুলিশের গাড়ি ছিল তাদের নিশানায়। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশবাহিনীও। পরে আসরে নামে সেনাবাহিনী। জম্মুর পুলিশ প্রধান এসএসপি শ্রীধর পটেল জানিয়েছেন, টোল প্লাজার কাছে একটি গাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল জঙ্গিরা। সেখান থেকেই গুলি চালাচ্ছিল।
পুলিশ ও সেনা সূত্রে খবর, গাড়িতে মোট চারজন জঙ্গি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই গাড়ি ঘিরে ফেলে গুলি চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। লেফটেনেন্ট কর্নেল দেবেন্দ্র আনন্দ বলেছেন, জানুয়ারির শেষেও ঠিক এমনই জঙ্গি হামলা হয়েছিল নাগরোটা টোল প্লাজার কাছে। সেবারও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। প্রাণ গিয়েছিল এক পুলিশকর্মীর, খতম হয়েছিল তিন জঙ্গি।
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরেই অন্তত ২০০ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে ভারতীয় বাহিনী। যাদের মধ্যে দু’জন প্রতাপশালী হিজবুল কম্যান্ডার। নিয়ন্ত্রণরেখায় লাগাতার পাক সেনার সংঘর্ষবিরতির মাঝেই একের পর এক জঙ্গি নিধন অভিযানে সাফল্য এসেছে ভারতীয় সেনার। গত মাসেই পুলওয়ামায় সেনার গুলিতে খতম হয়েছে হিজবুলের অপারেশনাল কম্যান্ডার সইফ উল ইসলাম ওরফে ডক্টর সৈফুল্লাহ। কাশ্মীরে হিজবুল গোষ্ঠীর সক্রিয় কম্যান্ডার ছিল সৈফুল্লাহ। রিয়াজ নাইকুর হত্যার পরে হিজবুলের নেটওয়ার্ক ছিল তারই হাতে। এই কম্যান্ডারের মৃত্যু নিঃসন্দেহে জঙ্গি গোষ্ঠীতে একটা বড় ধাক্কা। জম্মু-কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ বলেছেন, রিয়াজ নাইকু খতম হওয়ার পরে কাশ্মীরে হিজবুল গোষ্ঠী শুধু নয় অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের অন্তত ২০০ জনকে খতম করা সম্ভব হয়েছে।
এদিকে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে পাক মদতপুষ্ট প্রায় আড়াইশো জঙ্গি। সন্ত্রাসবাদীদের নিয়ন্ত্রণরেখা পার করিয়ে দিতে লাগাতার সংঘর্ষ বিরতি ভেঙে চলেছে পাক সেনারা। কিছুদিন আগেই নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি ভেঙে নির্বিচারে গোলাগুলি চালায় পাক সেনারা। নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া একাধিক গ্রামকে নিশানা করে হামলা চালানো হয়। পাক সেনার গুলিতে শহিদ হন চার ভারতীয় জওয়ান, প্রাণ যায় সাধারণ মানুষেরও। এরপরেই মোক্ষম জবাব দেয় ভারতীয় বাহিনী। অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল, রকেট ছুড়ে নাস্তানাবুদ করা হয় পাক বাহিনীকে। ভারতীয় সেনার ছোড়া মিসাইলে সীমান্তের ওপারে পাক সেনাদের একাধিক লঞ্চ প্যাড ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। গুঁড়িয়ে গিয়েছে একাধিক জঙ্গি শিবিরও।