
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগুন লাগল পুণের সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরির কারখানায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে চারপাশ। পাশাপাশি আট থেকে ন’টি বিল্ডিং আছে সেরামের ওয়ার্কশপের। একটিতে ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে দমকলের ৯-১০টি ইঞ্জিন। ওয়ার্কশপে স্টোর করে রাখা টিকার ভায়াল নষ্ট হয়নি বলেই এখনও অবধি জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টে নাগাদ সেরামের টার্মিনাল-১ গেটের কাছে আগুন লেগে যায়। সূত্রের খবর, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকল। দেশজুড়ে কয়েক লক্ষ টিকার ডোজ সরবরাব করেছে সেরাম। ধাপে ধাপে টিকার ভায়াল পুণে থেকে এসে পৌঁছচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। এর মধ্যেই সেরামের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের খবর সামনে আসতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যদিও কোম্পানির তরফে বলা হয়েছে, টিকা তৈরি হয় যে ইউনিটে সেটা অক্ষতই আছে। টিকার স্টোরেজের জায়গাতেও কোনও ক্ষতি হয়নি।

ভারতে শুধু নয় বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট। মঞ্জরি কমপ্লেক্স এলাকায় সেরামের আট থেকে ন’টি ওয়ার্কশপ আছে। সবকটাই বহুতল বিল্ডিং। প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে আছে বিল্ডিংগুলি। তার কোথাও টিকা নিয়ে গবেষণা হয়, কোথাও টিকার উৎপাদন হয়, আবার ভ্যাকসিন স্টোর করে রাখার আলাদা ইউনিটও আছে। করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক শুধু নয়, অন্যান্য রোগেরও টিকা বানায় ভ্যাকসিন। প্রতিদিনই বিপুল উৎপাদন হয় ইউনিটগুলোতে।

সেরামের কারখানায় আগুন লাগার যে ভিডিওগুলি সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে একটি বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আগুন ছড়িয়ে পড়েছে কয়েকটি তলায়। দমকল সূত্রের খবর, আগুন লাগার সময় বিল্ডিংয়ের ভেতরে চারজন লোক ছিলেন। তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আর একজনের খোঁজ চলছে। ধোঁয়া এতটাই বেশি, যে উদ্ধারকাজে দেরি হচ্ছে।
আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। দমকলকর্মীদের অনুমান, মঞ্জরি কমপ্লেক্স এলাকায় সম্প্রতি কিছু নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রজেনেকার সঙ্গে চুক্তি করে তাদের চ্যাডক্স টিকা ভারতেই তৈরি করেছে সেরাম। দেশে তৈরি এই টিকার নাম কোভিশিল্ড। পুণের ফার্মেই টিকার উৎপাদন হচ্ছে। সেরামের কর্ণধার আদর পুণাওয়ালা জানিয়েছে, মার্চের মধ্যেই কোভিশিল্ড টিকার তিন থেকে চার কোটি ডোজ বিতরণ করা হবে দেশের সবকটি রাজ্যে। এখনই প্রায় ৬০ লক্ষ ডোজ বন্টন করা হয়েছে। বছর শেষের আগেই প্রায় ১০০ কোটি টিকার ডোজ তৈরির বৃহত্তর পরিকল্পনা আছে সেরামের। প্রতিবেশী দেশগুলিতেও কোভিশিল্ড টিকার ডোজ পাঠানো হবে। সে প্রস্তুতিও চলছে। কাজেই এখন প্রতিদিন টিকার বিপুল উৎপাদন হচ্ছে। এমন সময় আগুন লাগার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও টিকার উৎপাদনে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই আশ্বস্ত করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট।