
‘হাতজোড় করে বলছি অপরাধীদের ফাঁসি দিন’, হাথরস-বিক্ষোভে উত্তাল দিল্লিতে সুর চড়ালেন কেজরিওয়াল
সন্ধে থেকে বিক্ষোভ-মিছিলে উত্তাল দিল্লি। হাথরস গণধর্ষণ কাণ্ডের সুবিচার চেয়ে রাজধানীর পথে নেমেছে কংগ্রেস, আপ ও অন্যান্য কয়েকটি গণ সংগঠন।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাথরসের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে। হাতজোড় করে সরকারের কাছে অনুরোধ, অপরাধীদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝোলাবার ব্যবস্থা করুন, দিল্লির যন্তর মন্তরে প্রতিবাদ মিছিল থেকে আওয়াজ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
সন্ধে থেকে বিক্ষোভ-মিছিলে উত্তাল দিল্লি। হাথরস গণধর্ষণ কাণ্ডের সুবিচার চেয়ে রাজধানীর পথে নেমেছে কংগ্রেস, আপ ও অন্যান্য কয়েকটি গণ সংগঠন। যন্তর মন্তরের কাছে প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলাতে দেখা যায় কেজরিওয়াল ও ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদকেও। কেজরিওয়াল বলেছেন, “আমরা সুবিচারের লক্ষ্যে এখানে জড়ো হয়েছি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি, আমাদের মেয়ের আত্মা যেন চিরশান্তিতে থাকে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ, যারা এই কুকর্মে জড়িত তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হোক যাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায় অপরাধীরা।”
প্রতিবাদের সুর চড়িয়ে টুইট করে চন্দ্রশেখর বলেছেন, “আমি হাথরসে যাব। যতক্ষণ না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন এবং অন্যায়ের সুবিচার হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে। দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে অনুরোধ, এই ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক।”
২০ বছরের নির্যাতিত ও নিহত দলিত মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে পুলিশি নিগ্রহের শিকার হন রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ তাঁদের হাথরসে ঢুকতে দেয়নি। মাঝরাস্তায় গ্রেফতারির পরে নয়ডা থেকেই তাঁদের ফিরে আসতে হয় দিল্লিতে। এদিন দিল্লির পথে নেমে বিক্ষোভে মিছিলে সামিল হয়েছে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা। উত্তরপ্রদেশের মতো দিল্লির রাজপথেও এদিন পুলিশি প্রহরা রয়েছে খুব কড়া। ইন্ডিয়া গেট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ১০০ জনের বেশি যন্তর মন্তরের কাছে জমায়েত করতে পারবে না। তবে পুলিশি নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে এদিন বিকেল থেকেই যন্তর মন্তরের কাছে প্রায় পাঁচশো বিক্ষোভকারীর জমায়েত লক্ষ্য করা গেছে।
গণধর্ষিতার দেহ পুলিশি ঘেরাটোপে জ্বালিয়ে দেওয়া নিয়ে দেশজোড়া প্রবল বিক্ষোভের আবহে প্রকাশ্যে কিছু না বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যোগীকে নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত চালাতে। এর পরে ধর্ষিতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা, পরিবারের একজনের চাকরির কথা ঘোষণা করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ এবং নৃশংস নির্যাতনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে লবকুশ, রাম, রবি এবং সন্দীপ নামে চার উচ্চবর্ণের যুবকের।
গণধর্ষণের পর শরীরের বিভিন্ন অংশে নৃশংস আঘাত করা হয়েছিল হাথরসের দলিত তরুণীকে। জিভ কেটে নেওয়া হয়েছিল, গলার কাছে হাড় ভাঙা ছিল তরুণীর। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানিয়েছে, সারা শরীরে অসংখ্য ক্ষতের দাগ ছিল, গলায় বারে বারেই ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা হয়েছিল উনিশ বছরের মেয়েটিকে। তাঁর সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। নারকীয় এই ঘটনায় গোটা দেশ যখন ক্ষোভে ফুঁসছে, তখন গভীর রাতে তরুণীর বাড়িতে পৌঁছে মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেয় পুলিশ। সেই ঘটনার পর থেকে হাথরস এখনও অবরুদ্ধ। জানা গিয়েছে, গ্রামে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না । কার্যত সিল করে দেওয়া হয়েছে গোটা গ্রামই।