
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দৈনিক সংক্রমণের হারে লাগাম নেই। ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। গত কয়েকদিনে চিন্তা বাড়িয়ে ৯০ হাজারের বেশি দৈনিক সংক্রমণ ধরা পড়ছিল দেশে। গতকালই ৯২ হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। আজ, মঙ্গলবার সকালের বুলেটিনে দেখা গেল দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কিছুটা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮০৯ জন।
দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৯ লাখ পেরিয়ে গেছে। সংক্রমণের নিরিখে আমেরিকার পরেই বিশ্বের দু’নম্বর জায়গায় বসে আছে ভারত। আগে ব্রাজিলের সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ছিল ভারতের চেয়ে বেশি। এখন ব্রাজিলকেও টপকে গেছে ভারত। করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও ১০ লাখ ছুঁতে চলেছে। অ্যাকটিভ কেস প্রায় ২১ শতাংশ।
করোনা পজিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হার খুব একটা কমেনি। দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক তাদের পরিসংখ্যাণে জানিয়েছিল, দেশে কোভিড পজিটিভিটি রেট ৮ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে। প্রতিদিন যত জন রোগীর করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যতজন রোগীর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলে কোভিড পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। কোভিড পজিটিভিটি রেট থেকেই বোঝা যায় সংক্রমণ কী পরিমাণে ছড়াচ্ছে এবং কতজনের মধ্যে ছড়াচ্ছে। মাসের শুরু থেকেই এই সংক্রমণের হার কখনও বেড়েছে আবার কখনও ঝপ করে কমে গেছে। গোড়ার দিকে পজিটিভিটি রেট কমে ৭.৯ শতাংশের কাছাকাছই পৌঁছেছিল। পরে দেখা যায় সেটাই বেড়ে ৮.০৫ শতাংশ হয়ে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশে পৌঁছে গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের লক্ষ্য হল এই পজিটিভিটি রেট পাঁচ শতাংশের মধ্যে বেঁধে ফেলা। তাহলে সংক্রমণ ছোট ছোট জায়গাতেই আটকে যাবে। বেশি এলাকাজুড়ে ছড়াতে পারবে না, ফলে সহজেই সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।


করোনায় মৃত্যুহার কমেছে। যদিও একদিনে ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১০৫৪ জনের। দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি। তবে মৃত্যুহার ১.৬৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃত্যুহার একের নীচে নামিয়ে আনাই লক্ষ্য। তার জন্য চার ‘টি’ ফর্মুলায় কোভিড টেস্ট, কনট্যাক্ট ট্রেসিং, রোগীদের শনাক্তকরণ এবং তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দেশে এখন করোনায় সুস্থতার হার ৭৮.২৮ শতাংশ। কেন্দ্রের হিসেবে একদিনে সংক্রমণ সারিয়েছেন ৭৯ হাজার ২৯২ জন। দেশে এখন কোভিড জয়ীদের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৯ হাজার ৩৯৯ জন।
আশার কথা হল, কোভিড টেস্ট আরও বেড়েছে দেশে। এ যাবৎ প্রায় ৬ কোটির কাছাকাছি করোনা পরীক্ষা হয়েছে দেশজুড়েই। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর হিসেবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লক্ষ ১২ হাজার ২৭৩। গতকাল সোমবার দেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে প্রায় ১১ লাখের কাছাকাছি। দেশে কোভিড টেস্টের ল্যাবরেটরির সংখ্যা আরও বেড়েছে। মোট ১৭২৬টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে যার মধ্যে সরকারি ল্যাবরেটরি ১০৫৩টি ও বেসরকারি ল্যাব রয়েছে ৬৭৩টি। সবচেয়ে বেশি হয়েছে রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে দেশের ৮৭৫টি ল্যাবরেটরিতে আরটি-পিসিআর টেস্ট হচ্ছে। ট্রুন্যাট টেস্ট হচ্ছে ৭২৯টি ল্যাবরেটরিতে।