
৮০ লাখের গণ্ডি ছাড়াল ভারত, তবে গত ১৮ দিনে সংক্রমণের হার কম
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের হার কমার আরও একটা কারণ হল কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমেছে। অক্টোবরের শেষে যেখানে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়ে যাবে শঙ্কা করা হয়েছিল, সেখানে এখন কোভিড অ্যাকটিভ কেস দশ লাখেরও কম।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা সংক্রমণ ৮০ লাখের গণ্ডি পেরিয়ে গেল। দেশে এখন কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৮০ লাখ ৪০ হাজার। তবে কেন্দ্রের হিসেব বলছে, করোনা সংক্রমণ ৭০ লাখ থেকে ৮০ লাখের গণ্ডিতে পৌঁছতে সময় লেগেছে ১৮ দিন। এই সময়ে দৈনিক সংক্রমণের হারও কমেছে। অক্টোবরের শুরুর দিকে ৬০ লাখ থেকে ৭০ লাখের গণ্ডি পার হতে সময় লেগেছিল মাত্র ১৩ দিন। গতমাসে যা ছিল আরও কম। অর্থাৎ কম দিনেই বেশি সংখ্যক আক্রান্তের খোঁজ মিলছিল। এখন সেই ছবি বদলেছে। সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে কমছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের হার কমার আরও একটা কারণ হল কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমেছে। অক্টোবরের শেষে যেখানে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ছাড়িয়ে যাবে শঙ্কা করা হয়েছিল, সেখানে এখন কোভিড অ্যাকটিভ কেস দশ লাখেরও কম। আজকের হিসেবে ৬ লাখের কাছাকাছি। করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমলে, সংক্রমণ বেশিজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হবে। ট্রান্সমিশন রেট কমবে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করবে।
করোনায় মৃত্যুও আগের থেকে অনেক কমেছে। কেন্দ্রের বুলেটিন বলছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণে ৫১৭ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যু ১ লাখ ২০ হাজারের কাছাকাছি। তবে মৃত্যুহার কম। কেন্দ্রের হিসেবে ১.৫০ শতাংশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে বেশিরভাগ কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে কো-মর্বিডিটির কারণে। শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ছাড়াও হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, কিডনি বা ক্রনিক লিভার, ফুসফুসের রোগ অথবা ক্যানসার রয়েছে অনেকের। এই সংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশের কাছাকাছি।
কেন্দ্রের হিসেব বলছে, কোভিড পজিটিভিটি রেট কিছুটা বেড়েছে। গতকালই পজিটিভিটি রেট ৩.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪.১ শতাংশ। কোভিড পজিটিভিটি বা করোনা পজিটিভ কেসের হার বার করা হয়, যতগুলি কোভিড টেস্ট করা হয়েছে তার মধ্যে কতজন রোগীর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে অর্থাৎ কতজন রোগী কোভিড পজিটিভ সেই সংখ্যা হিসেব করে। মে মাসের শুরুতে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা যত ছিল, মে-র শেষ থেকে জুনের শুরু অবধি সেই সংখ্যা অনেকটাই বাড়ে। রিপোর্ট বলছে, গত ৬ মে করোনা পজিটিভ কেসের হার ছিল ১০ শতাংশের কাছাকাছি। ১৩ মে সেটাই হয় ১১.৬%। ২১ মে-র পর থেকে কোভিড সংক্রমণ আরও বেশি জনের মধ্যে ধরা পড়ে। করোনা পজিটিভ কেসের হার পৌঁছয় ১৬.৫ শতাংশে। আর জুন মাসে সেই হারই ২০ শতাংশ ছাড়ায়। এখন ফের পজিটিভিটি রেট কমে দশ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।
COVID-19 Testing Update. For more details visit: https://t.co/dI1pqvXAsZ @MoHFW_INDIA @DeptHealthRes #ICMRFIGHTSCOVID19 #IndiaFightsCOVID19 #CoronaUpdatesInIndia #COVID19 #Unite2FightCorona pic.twitter.com/7Po4oHjVXQ
— ICMR (@ICMRDELHI) October 29, 2020
দেশের পাঁচ রাজ্যে এখনও করোনা সংক্রমণের হার বেশি। মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে এখনও কোভিড কার্ভ উপরের দিকেই। সে তুলনায় উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হার এখনও কম। মিজোরামে এতমাসের মধ্যে প্রথম মৃত্যু হয়েছে সংক্রমণে, তাও সে রোগীর কোমর্বিডিটি ছিল বলে খবর। পশ্চিমবঙ্গেও করোনা সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। পুজোর কয়েকটা দিনে দৈনিক সংক্রমণ চার হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে বাংলায়।
তবে সবকিছুর মধ্যেও আশার কথা হল, সুস্থতার হার বাড়ছে দেশে। আজকের বুলেটিনে দেখা গেছে কোভিড রিকভারি রেট ৯০.৯৯ শতাংশ। ৭৩ লাখের বেশি করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ বলছে, কোভিড টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে, তাই সংক্রমণও চটজলদি ধরা পড়ছে। কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে কোভিড রোগীদের সংস্পর্শে আসাদেরও শনাক্ত করা যাচ্ছে। দেশে এখনও অবধি ১০ কোটি ৬৫ লাখের বেশি করোনা পরীক্ষা হয়েছে। গতকালই ১০ লাখ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।