
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা ভারতে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। সূত্রের খবর, ফাইজারের সঙ্গে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলির সেভাবে কোনও চুক্তি হয়নি। কথাবার্তাও এগোয়নি। তাছাড়া ফাইজারের টিকা সংরক্ষণও একটা বড় প্রশ্ন। তাই এই মুহূর্তে ফাইজারের টিকা আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ব্রিটেনে আগামী সপ্তাহ থেকেই টিকা দিতে শুরু করবে মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট। ব্রিটেনের মেডিসিন অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রডোক্টস রেগুলেটরি কমিটি (এমএইচআরএ)-র সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের। ফাইজারের টিকার ৪ কোটি ডোজ কিনেছে ব্রিটেন সরকার। মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় টিকা তাজা রাখার প্রস্তুতি করে ফেলেছে ব্রিটেন।
সূত্রের খবর, গত অগস্টে ফাইজারের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছিল ভারতের কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির। তবে ওই পর্যন্তই। বিদেশ থেকে টিকা নিয়ে আসতে হলে আগে তার ট্রায়াল করা জরুরি। টিকার ডোজ কেমন প্রভাব ফেলছে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে তা জানার পরেই ছাড়পত্র দেয় ভ্যাকসিন রেগুলেটরি কমিটি। সে জন্য টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্টও জমা করতে হয়। যেমন, রাশিয়ার স্পুটনিক টিকার ট্রায়াল শুরু করেছে হায়দরাবাদের ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরি। এই টিকার ট্রায়াল সফল হলে তবেই সার্বিকভাবে প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হবে।
ভারতে ফাইজারের টিকা আসার সম্ভাবনা কম তার একটা বড় কারণ হল এর সংরক্ষণের নিয়ম। এই টিকা সংরক্ষণের জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। টিকা বিমানে চাপিয়ে নিয়ে যেতে হলেও এই ঠান্ডাতেই সংরক্ষণ করে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণত যে কোনও ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৩৬-৪৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ফাইজারের টিকা যেভাবে তৈরি হয়েছে তাতে টিকার উপাদান টাটকা রাখতে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি বা -৯৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয়। এত কম তাপমাত্রা তৈরি করতে হলে কোল্ড স্টোরেজে উন্নত পরিকাঠামো থাকা দরকার। সে ব্যবস্থা এই মুহূর্তে ভারতে নেই। আর এত তাড়াতাড়ি দেশের সব রাজ্যে এমন কোল্ড-চেন তৈরি করা সম্ভবও নয়।
তবে ফাইজারের টিকা না এলেও ভারতে আরও পাঁচ ভ্যাকসিনের ট্রায়াল তরতরিয়ে এগোচ্ছে বলেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন। যার মধ্যে অক্সফোর্ডের ফর্মুলায় তৈরি সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড টিকা, ভারত বায়োটেক ও জাইদাস ক্যাডিলার টিকা তৃতীয় পর্বের ট্রায়ালে রয়েছে। রুশ টিকা স্পুটনিক ভি দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু করেছে। বায়োটেকনোলজি ই খুব তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করবে।