
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এতদিন ছিল চারে। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় এক ধাক্কায় রাশিয়াকে পিছনে ফেলে তিনে উঠে এল ভারত। বিশ্বের কোভিড তালিকায় এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলের পরেই ভারতের স্থান।
জুলাইতে রেকর্ড সংক্রমণের ইঙ্গিত ছিলই। বিশেষজ্ঞদের গাণিতিক মডেলে তেমন আভাসই পাওয়া গিয়েছিল। গত কয়েকদিনের করোনা রিপোর্টে দৈনিক সংক্রমণের যে হিসেব পাওয়া গেছে তা চিন্তার কারণ। গত সপ্তাহে প্রতিদিনের হিসেবে ১৮-২০ হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছিল। কিছুদিন যাবৎ সেটাই ২২ থেকে ২৪ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আজ তো সব রেকর্ড ভেঙেই দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সকালের বুলেটিনেই দেখা গেছে, একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ছুঁয়েছে। ২৪ ঘণ্টার নিরিখে যা সর্বাধিক।
রবিবার সন্ধেয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের করোনা পরিসংখ্যাণে দেখা গেছে দেশে এখন মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৯৫ হাজারের কাছাকাছি। সেই তুলনায় রাশিয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৮১ হাজারের কাছাকাছি। কোভিড সংক্রমণের নিরিখে রাশিয়াকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত। করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে এখনও বিশ্বের কোভিড তালিকার শীর্ষেই আছে আমেরিকা। মোট সংক্রামিত ২৯ লাখের বেশি। এরপরেই ব্রাজিল। আক্রান্ত ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলায় করোনা সংক্রমণের সব রেকর্ড ভাঙল, একদিনে আক্রান্ত প্রায় ৯০০, মৃত্যু ২১ জনের
দেশে নতুন সংক্রমণ যেমন রেকর্ড করেছে, তেমনি মৃত্যুও সর্বাধিক। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণে। সেই সঙ্গেই দেশে মোট মৃত্যু ১৯ হাজারের গণ্ডি পেরিয়েছে। মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৬৭১ জনের। আক্রান্ত ধারাবাহিকভাবে বেড়ে দু’লাখ ছুঁয়েছে। আজ সাত হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে মুম্বইতেই। রাজধানীতে করোনা সংক্রমণ এক লাখ ছুঁল বলে। মৃত্যু ইতিমধ্যেই তিন হাজার। তবে দিল্লিতে কোভিড সারিয়ে সেরে উঠেছেন ৬৮ হাজারের বেশি। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে দিল্লি সরকার। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সার্ভে করার বদলে এখন দিল্লিকে তিনটি জ়োনে ভাগ করা হবে। কনটেইনমেন্ট জ়োন, নতুন করে যেসব এলাকায় করোনা পজিটিভ রোগীদের শনাক্ত করে আলাদা করা হয়েছে সেই আইসোলেটেড জ়োন এবং যেখানে করোনা সংক্রমণ নামমাত্র বা নেই, সেই এলাকা অর্থাৎ করোনা-ফ্রি জ়োন। প্রতিটি এলাকায় স্ক্রিনিং ও কনট্যাক্ট ট্রেসিং বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে অ্যান্টিবডি টেস্ট বা সেরো-সার্ভেও বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সুস্থতার হারও বেড়েছে দেশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে দেশে কোভিড রিকভারি রেট ৬০.৭৭%। দিল্লি, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশেও ধীরে ধীরে সুস্থতার হার বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, দিল্লিতে সুস্থতার হার ৬০% থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৬%। কোভিড রিকভারি রেট সবচেয়ে বেশি মেঘালয়ে প্রায় ৯০%, রাজস্থানে ৭৯% এর কাছাকাছি। গুজরাট ও বিহারে ৭৫ শতাংশের বেশি। কোভিড মোকাবিলায় একবছরের জন্য নতুন গাইডলাইন ঘোষণা করেছে কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার। যেমন জনবহুল স্থানে মাস্ক পরা, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং বাধ্যতামূলক। পাবলিক প্লেসে মাস্ক না পরলেই ১০ হাজার টাকা ফাইন দিতে হবে। পাশাপাশি বিয়ে বা যে কোনও আনন্দের অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি নিমন্ত্রণ পাঠানো যাবে না, শেষকৃত্যে ২০ জন। তাছাড়া মিছিল, ধর্না বা যে কোনও সামাজিক জমায়েতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।