
পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র পৃথ্বী-২-এর উৎক্ষেপণ সফল, আঘাত হানবে ৩৫০ কিলোমিটার লক্ষ্যে
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জোড়া পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গেই পাশ করে গেল পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র পৃথ্বী-২। ফের বড় সাফল্য দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে।
বুধবার সন্ধ্যে ৭ থেকে ৭টা ১৫ মিনিটের মধ্যে ওড়িশার সমুদ্র উপকূলের চাঁদিপুর টেস্ট রেঞ্জ থেকে মাটি কাঁপিয়ে একই সঙ্গে ছোড়া হয় দু’টি পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্র। রাতের অন্ধকারে এই দুই পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্রের দক্ষতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরপর দু’টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয়। দু’বারেই সফল হয়েছে পৃথ্বী-২।
চাঁদিপুর টেস্ট রেঞ্জ থেকে বঙ্গোপসাগরের বুকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানে এই ক্ষেপণাস্ত্র। গোটা উৎক্ষেপণ পর্বে পুরো এলাকাতেই ভারতীয় সেনার নজরদারি ছিল। তদারকিতে ছিলেন ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) বিজ্ঞানীরাও। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রের সাফল্যে উৎফুল্ল ভারতীয় সেনা।
পরমাণু অস্ত্র বহন ও যে পাল্লায় নিক্ষেপ করা হবে, তার নিরিখে পৃথ্বী-১-এর চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে পৃথ্বী-২। সাড়ে আট মিটার লম্বা ও ৪,৬০০ কিলোগ্রাম ওজনের ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি। ২৫০ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে শত্রু পক্ষের ঘাঁটিতে গিয়ে সরাসরি আঘাত হানতে পারে। এর নিশানা নির্ভুল। ৫০০ থেকে ১০০০ কিলোগ্রাম ওজনের পরমাণু অস্ত্র বহন করতে সক্ষম পৃথ্বী-২। তরল জ্বালানির জোড়া ইঞ্জিনের সাহায্যে এই ক্ষেপণাস্ত্র এগিয়ে যায় তার লক্ষ্যে। দিনের বেলায় নিজের দক্ষতার প্রমাণ আগেই দিয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র, এবার রাতের অন্ধকারের অগ্নিপরীক্ষায় সফল হল সে।
পৃথ্বী-২ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম সফল উৎক্ষেপণ হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সরকারি ভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতীয় বিমান বাহিনীর হাতে এসেছে ২০০৩ সালে। এরপর এর প্রযুক্তিতে আধুনিকীকরণ করা হয়। নিখুঁত ভাবে শত্রু পক্ষের ঘাঁটি চিনে নিতে ও তার ওপর আঘাত হানতে সর্বাধুনিক ‘ইনার্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম’ রয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্রে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি শত্রু পক্ষের অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রেরও নজর এড়িয়ে যেতে পারে। দিন কয়েক আগেই রাতের অন্ধকারে ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম অগ্নি –২ ব্যালিস্টিক মিসাইল। এবার দেশের অস্ত্র ভাঁড়ারকে আরও শক্তিশালী করতে সেই তালিকায় যোগ হল পৃথ্বী-২।