
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা আবহের মধ্যেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বা জয়েন্ট এবং মেডিক্যালের নিয়োগ পরীক্ষা বা নিট নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই নিজেদের মত জানিয়েছেন বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন রাজ্যের সরকার ও বিরোধী দলগুলি। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছ’টি রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও করেছে। এর মধ্যেই এবার কেন্দ্রের উদ্দেশে ভিডিও বার্তা পাঠালেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি শোনার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার একটি ভিডিও বার্তা দেন সনিয়া। সেখানে তিনি বলেন, “আমার প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা, আমি বুঝতে পারছি এই সময় খুবই কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে তোমাদের। তার কারণ হল তোমাদের পরীক্ষা। তোমাদের ও তোমাদের পরিবারের কাছে প্রধান বিষয় হচ্ছে কখন ও কোথায় এই পরীক্ষা হবে। তোমরা আমাদের ভবিষ্যৎ। এক উন্নত ভারত গড়ার জন্য তোমাদের উপর আমরা ভরসা করি। তাই তোমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হলে সেটা তোমাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই নেওয়া উচিত। আমি আশা করছি সরকার তোমাদের কথা শুনবে। তোমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। এটাই সরকারকে আমার উপদেশ। ধন্যবাদ জয় হিন্দ।”
Students are our future, we depend on them to build a better India, therefore, if any decision has to be taken regarding their future it is important that it is taken with their concurrence.: Congress President Smt. Sonia Gandhi #SpeakUpForStudentSafety pic.twitter.com/Jf18cmykbd
— Congress (@INCIndia) August 28, 2020
সম্প্রতি সনিয়া গান্ধীর ডাকে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, রাজস্থান, পুদুচেরীর মুখ্যমন্ত্রীরা ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেন। সেখানেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তাব দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও করা হয়েছে পরীক্ষা বাতিল করার দাবিতে।
সনিয়া ও বিরোধীরা যতই বলুন, কেন্দ্রের দাবি, পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের চাপেই এই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল এই পরীক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন দেড়শর বেশি শিক্ষাবিদ।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক বলেছেন, “জয়েন্টে বসা ৮ লাখ ৫৮ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং নিটের ১৫ লাখ ৯৭ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী ইতিমধ্যেই অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৭ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। এর থেকেই প্রমাণিত পরীক্ষা দিতে মরিয়া তাঁরা।”
পোখরিয়াল আরও বলেন, “পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য জয়েন্টে কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৭০ থেকে বাড়িয়ে ৬৬০ করা হয়েছে। অন্যদিকে নিট পরীক্ষার কেন্দ্র ২৫৪৬ থেকে বাড়িয়ে ৩৮৪২ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ীই তাঁরা পরীক্ষা কেন্দ্র পছন্দ করতে পেরেছেন। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গেই রয়েছি। তাঁদের সুরক্ষা আমাদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। তারপরে তাঁদের শিক্ষা।”
কেন্দ্রের জবাবের পরেও কিছু ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সংক্রমণ বৃদ্ধির এই সময়ে এই পরীক্ষা নেওয়া মানে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য নিয়ে ছেলেখেলা করা। প্রশ্ন তুলেছেন জলবায়ু নিয়ে আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গও। টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে এই পরীক্ষা স্থগিত করার দাবি তিনি জানিয়েছেন। এবার ভিডিও বার্তা পাঠালেন সনিয়া গান্ধীও।