
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে একের পর ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় সাফল্য পাচ্ছে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। সমুদ্র সুরক্ষায় তৈরি নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণেও অবিশ্বাস্য সাফল্য এসেছে। ভূমি থেকে তীর বেগে ছুটে গিয়ে আকাশে নিশানা লাগিয়েছে ভার্টিকল লঞ্চ কম পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল।
ওড়িশার বালাসোরের লঞ্চ প্যাড থেকে নতুন দুই এয়ার মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয় গতকাল সন্ধেয়। দুটি মিসাইলই ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করা যায়। ডিআরডিও জানিয়েছে, সমুদ্র সুরক্ষাতেও এই ছোট পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যবহার করতে পারেন নৌসেনারা। শত্রুপক্ষের যে কোনও আধুনিক যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করার ক্ষমতা আছে এই মিসাইলের। একবার নিক্ষেপ করলে এর গতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।
Indigenously designed & developed Vertical Launch Short Range Surface to Air Missile (VL-SRSAM) by DRDO for Indian Navy has undergone two successful launches today. The missile is capable of neutralizing various aerial threats at close ranges. pic.twitter.com/dPaVRlrmlt
— DRDO (@DRDO_India) February 22, 2021
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম পাল্লায় লক্ষ্যবস্তুতে যেমন নির্ভুল নিশানা লাগিয়েছে এই মিসাইল, তেমনি বেশি পাল্লাতেও ছুটে গিয়ে টার্গেটে হিট করেছে। দিনে ও রাতে যে কোনও সময় কাজ করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা ও প্রযুক্তিতে ডিআরডিও-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে হায়দরাবাদের আরসিএল ও পুণের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ইঞ্জিনিয়ারস।
এই মিসাইলে আছে পালস রকেট মোটর ও ডুয়াল কন্ট্রোল সিস্টেম। ভারতীয় নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ থেকেও এই মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে দেখা হয়েছে। এর প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে ১০০টি টার্গেটে নজর রাখতে পারে এই রাডার।
ভারতীয় নৌসেনার হাতে এখন যে শক্তিশালী মিসাইল আছে তার মধ্যে কে-৪ উল্লেখযোগ্য। উৎক্ষেপন স্থল থেকে ৩৫০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানার ক্ষমতা থাকায় এটি ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল বা আইআরবিএম গোত্রে পড়ে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে এই আন্ডার-সি ব্যালিস্টিক মিসাইল বানিয়েছে ডিআরডিও। দৈর্ঘ্য ১২ মিটার। ওজন ১৭ টন (আপডেটেড ভার্সন ১৯ টন)। ২০০০ কিলোগ্রাম ওজনের পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ডিআরডিও জানিয়েছে, কে-৪ মিসাইলের রেঞ্জ অগ্নি-৩ ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই। শব্দের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন অর্থাৎ অরিহন্ত-ক্লাস সাবমেরিনের জন্যই বিশেষভাবে বানানো হয়েছে কে-৪ কে। এর নিশানা থেকে রেহাই মেলা প্রায় অসম্ভব। হাইপারসনিক স্পিড ও সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানা থেকে কোনওভাবেই রেহাই পাবে না শত্রুপক্ষের যে কোনও সামরিক অস্ত্র।
সমুদ্রগর্ভ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ভারতে হাতে আছে বিও-৫ মিসাইল। এর পাল্লা ৭০০ কিলোমিটার। তবে বিও-৫ মিসাইলের চেয়েও ভয়ঙ্কর ও শক্তিশালী কে-৪ ব্যালিস্টিক মিসাইল।