
করোনা সংক্রমণ চিন্তা বাড়াচ্ছে আট রাজ্যে, ৭১ শতাংশ মৃত্যু গত ২৪ ঘণ্টায়
কেন্দ্রের পরিসংখ্যাণ বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর ৭১ শতাংশ আট রাজ্য থেকে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও ছত্তীসগড়। দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি, ৮৯ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এর পরেই মহারাষ্ট্রে ৮৮ জন, বাংলায় ৫২ জন।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ কখনও নামছে, পরক্ষণেই উঠছে। সংক্রমণের হার কখনও কম, আবার কখনও এক ধাক্কায় বেড়ে যাচ্ছে। এতদিন দৈনিক সংক্রমণের হার রেকর্ড করেছিল দিল্লিতে। এবার নতুন সংক্রমণের নিরিখে দিল্লিকেও ছাড়িয়ে গেল মহারাষ্ট্র। পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশও। করোনা সংক্রমণ কিছু রাজ্যে যেমন কমছে, তেমনি কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণের হার এখনও চিন্তার কারণ। দৈনিক মৃত্যুও বেশি।
কেন্দ্রের পরিসংখ্যাণ বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর ৭১ শতাংশ আট রাজ্য থেকে। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও ছত্তীসগড়। দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি, ৮৯ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। এর পরেই মহারাষ্ট্রে ৮৮ জন, বাংলায় ৫২ জন।
বিশ্বের করোনা আক্রান্ত দেশগুলির তালিকায় ফের দু’নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। আমেরিকার পরেই ভারতে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেশি। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা। হিসেব বলছে, দেশে এখন করোনা অ্যাকটিভ রোগী সাড়ে চার লাখের বেশি। অ্যাকটিভ কেসের হার ৪.৮৩ শতাংশ।
গত ৩৭ দিনে মহারাষ্ট্রে ফের দৈনিক সংক্রমণ লাগামছাড়া। বৃহস্পতিবারই ১৮ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল সংক্রমণ। নতুন আক্রান্ত ৬ হাজারের বেশি। মুম্বইতে দৈনিক সংক্রমণ ফের হাজার ছাড়িয়েছে। এদিকে রাজধানীতেও কোভিড কার্ভ ঊর্ধ্বমুখী। দিল্লির স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, প্রায় ২৮ হাজার রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট হয়েছে। নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে পাঁচ হাজার। কোভিড পজিটিভিটি রেটও বেশি। প্রায় ৮.৬৫। আগে ছিল ৮.৪৯। দিল্লিতে নাইট কার্ফু চালু হচ্ছে। স্কুল-কলেজ আপাতত সবই বন্ধ। উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া বলেছেন, ভ্যাকসিন না আসা অবধি স্কুল খোলার কোনও প্রশ্নই নেই।
কেরলে ছ’হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে আজকের হিসেবেই, মহারাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার ৯৬৫। দিল্লিতে ফের দৈনিক সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়াচ্ছে, আজকের হিসেবে করোনা আক্রান্ত ৪ হাজার ৯৯৮ জন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা অ্যাকটিভ রোগী বাড়ছে এবং সেই সঙ্গে বাড়াচ্ছে দেশের এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর তথা আর নম্বর। গত মাসে আর নম্বর নেমে গিয়েছিল ০.৮৮ পয়েন্টে। দিল্লিতে সংক্রমণ বৃদ্ধির পরে ফের আর নম্বর বাড়ে ০.৯৫ পয়েন্টে। তবে গত দু’সপ্তাহ আগেও চেন্নাইয়ের ইনস্টিটিউট অব ম্যাথেমেটিক্যাল সায়েন্সের গবেষকরা খবর দিয়েছিলেন আর নম্বর ফের ০.৯০ পয়েন্টে নেমে গিয়েছে। এতদিন এই নম্বরে স্থিতিশীল ছিল, তবে এ সপ্তাহে ফের বেড়ে একের উপর উঠে গেছে। দেশে এখন এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর ১.০৪। দেশের কয়েকটি রাজ্য তথা তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে আর নম্বর বেড়েছে অনেকটাই। মহারাষ্ট্রেও আর নম্বর ০.৯১ থেকে বেড়ে ১.০৬ পয়েন্টে পৌঁছেছে। দিল্লিতে ০.৮৯, রাজস্থানে ১.০৯ থেকে বেড়ে ১.২২, মুম্বইতে ১.১২, কেরলে আর নম্বর ০.৮৭ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ০.৯৪ পয়েন্টে পৌঁছে গেছে। মহারাষ্ট্র, কেরল ও দিল্লিতে আর নম্বর বেশি, তাই সেখানে সংক্রমণ ছড়ানোর হারও বেশি।