
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রে হঠাৎ করেই করোনা সংক্রমণ মাত্রা ছাড়িয়েছে। চড়চড় করে বাড়ছে করোনা গ্রাফ। সংক্রমণ এর মধ্যেই ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দৈনিক হারও বেশি। মাথায় হাত পড়ে গেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের।
কোভিড টেস্ট ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে ধরা পড়েছে, করোনার একটি নতুন স্ট্রেন ছড়িয়েছে মহারাষ্ট্রের দুটি জেলায়। অমরাবতী ও আকোলা জেলায় বহুজনের নমুনা পরীক্ষা করে ওই নতুন স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই স্ট্রেনের সঙ্গে ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা বা ব্রাজিলীয় স্ট্রেনের মিল আছে কিনা সেটা এখনও জানা যায়নি। তবে রোগীদের থেকে নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স করে দেখা গেছে, ওই নতুন স্ট্রেন খুবই সংক্রামক। দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
করোনার ওই নতুন স্ট্রেনের মিউটেশন বা জিনগত পরিবর্তনও শুরু হয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভাইরাল স্ট্রেনের জিনগত বিন্যাস যদি বদলে যায় বা জেনেটিক মিউটেশন শুরু হয়, তাহলে সেই স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই চিন্তা আরও বেড়েছে। আরও একটা বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে এই নতুন স্ট্রেনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতজনের শরীরে করোনার এই নয়া প্রজাতির খোঁজ মিলেছে, তাঁদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ এই স্ট্রেনের সংক্রমণে প্রথম নিউমোনিয়ার উপসর্গই দেখা যাচ্ছে রোগীর শরীরে।
অমরাবতী, যবৎমলে এই নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অমরাবতীতে ৭০০ জন করোনা রোগীর প্রায় ৩৫০ জনের শরীরেই নতুন স্ট্রেনের মিউটেশন লক্ষ্য করা গেছে। নাগপুর, অরঙ্গাবাদেও ছড়িয়েছে নতুন স্ট্রেন। সংক্রামিতের সংখ্যাও গত ১৫ দিনে মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ রোখা না গেলে বহু জনের শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষত, মহারাষ্ট্রের বেশিরভাগ জেলা ও শহরেই করোনাবিধি মানছেন না লোকজন। মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনগুলিতে মাস্ক ছাড়াই সফর করে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগকেই। রাস্তাঘাটেও মাস্ক, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মানছেন না অনেকেই।
মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকার বলেছেন, সংক্রমণ এতটাই ছড়িয়েছে যে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মুম্বইতে এখন করোনায় মৃত্যুহার ২.৪১ শতাংশ, যেখানে সারা দেশে করোনায় মৃত্যু হার দেড় শতাংশের নীচে নেমে গেছে। কোভিড ডাবলিং টাইম (যতদিনে সংক্রমণের হার প্রায় দ্বিগুণ হয়) কমছে। আগে মুম্বইতে সংক্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার সময় ছিল ৬০০ দিন, এখন যা ৪০০ দিনে এসে ঠেকেছে। জি নর্থ ওয়ার্ডের এলাকাগুলিতে সংক্রমণের হার কমে গিয়েছিল। গত কয়েকদিনে ফের তা বেড়েছে। এই জি নর্থ ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে ধারাভি, দাদার ও মহিম। দশ হাজারের বেশি বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়েছে। মেয়র বলছেন, সংক্রমণের কার্ভ না কমলে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে প্রশাসন।