
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সেই সম্ভাবনা কি আবার ফিরে আসতে চলেছে? আশঙ্কা বাড়ছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। উদ্বেগের পারদ চড়ছে।
মহারাষ্ট্র সহ দেশের পাঁচ রাজ্যে কোভিড গ্রাফ এতটাই বেড়েছে যার প্রভাব পড়েছে মোট পরিসংখ্যাণে। দৈনিক সংক্রমণ যা দশ হাজারের নীচে নেমেছিল, তাই এখন লাগামছাড়া। চিন্তা বাড়িয়েছে ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। নভেম্বরের শেষ থেকে ক্রমশ করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমতে কমতে দেড় লাখের নীচে নেমে যায়। অ্যাকটিভ কেসের হারও থাকে দেড় শতাংশের কম। আশায় বুক বাঁধেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। সংক্রমণের হার কমতে থাকে দ্রুত। কিন্তু গত ১৭ দিনের কোভিড কার্ভ আর অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা দেখে ফের ঘুম উড়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের।
হিসেব বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ শতাংশ। নতুন করে সংক্রামিত ৪ হাজার ৪২১ জন। ফলে করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ফের দেড় লাখের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে।
গত ২৪ নভেম্বর কেন্দ্রের বুলেটিনে দেখা গিয়েছিল করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ৩৮ হাজারের কাছাকাছি। তিনদিনের মধ্যে তা বেড়ে ৪ লাখ ৫৫ হাজারে পৌঁছয়। এরপর থেকে কোভিড কার্ভ কমতে শুরু করে। ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও কমে যায়। কিন্তু গত দুসপ্তাহে এই পরিস্থিতি বদলে গেছে। সংক্রমণের হার এতটাই বেড়েছে যে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে পারে কিনা সে নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মহারাষ্ট্র ও কেরলের পরিস্থিতি বিপজ্জনক। অ্যাকটিভ রোগী বেড়ে গেছে ৭৪%। ছত্তীসগড়, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীরেরও একই হাল। চড়চড় করে বাড়ছে সংক্রমণ।পাঞ্জাবে কোভিড পজিটিভিটি রেটও বেশি। এক সপ্তাহে বেড়ে গেছে ১.৬%। ফলে সংক্রমণ বেশিজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে।
স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, সংক্রমণের এই আচমকা বৃদ্ধির কারণ হল করোনার নতুন স্ট্রেন। কোভিড টেস্ট ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে ধরা পড়েছিল মহারাষ্ট্রের কয়েকটি জেলা যেমন, অমরাবতী, আকোলা, যবৎমলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার ওই নতুন স্ট্রেন। এখন দেখা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্রের বেশিরভাগ জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি। পাশাপাশি, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড় ও পাঞ্জাবেও নয়া স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ রোখা না গেলে বহু জনের শরীরে রোগ ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষত, মহারাষ্ট্রের বেশিরভাগ জেলা ও শহরেই করোনাবিধি মানছেন না লোকজন। মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনগুলিতে মাস্ক ছাড়াই সফর করে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগকেই। রাস্তাঘাটেও মাস্ক, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মানছেন না অনেকেই। মানুষের শরীরে এই নতুন স্ট্রেনের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, নয়া স্ট্রেনের জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনের বিন্যাস বের করে দেখা গিয়েছে, এটি পুনঃসংক্রমণ বা রিইনফেকশনও ঘটাতে পারে। অর্থাৎ শরীরে একবার এই স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়ানোর পরে বারে বারে তার ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সারিয়ে ওঠার পরে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তার ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এই নয়া স্ট্রেন।