
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভয়ঙ্কর ঘটনা মধ্যপ্রদেশে। রাজ্যের দুই জায়গায় দুই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের চেষ্টা করা হল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে গিয়েছে দু’জনেই। ঘটনার বীভৎসতায় তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে।
১৪ বছরের এক কিশোরী ও ১৯ বছরের এক কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। বছর চোদ্দর মেয়েটাকে ধর্ষণের পরে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে মাটিতে জ্যন্ত পুঁতে ফেলা হয়। কিন্তু পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচে যায় মেয়েটি। কলেজ পড়ুয়া তরুণীকে গণধর্ষণ করে ছুরি দিয়ে কোপায় অভিযুক্তরা। রক্তাক্ত দেহ বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হয় রেললাইনে। সেখান থেকেও প্রাণে বেঁচে ফেরে মেয়েটি।
স্কুল পড়ুয়া মেয়েটির বাড়ি বেতুল গ্রামে। ক্ষেতে কাজ করার সময় মোট বন্ধ করতে গিয়েছিল মেয়েটি। সেই সময় তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযুক্তরা। নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। মেয়েটি আর্তনাদ করতে থাকলে তার মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়ার চেষ্টা করে অপরাধীরা। এরপরে মেয়েটির শরীরের ওপর মাটি, পাথর ফেলে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির খোঁজ করার সময় ক্ষেতের ধারে একটি মাটি, পাথরের স্তূপ থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসতে শোনা যায়। পাথরের চাঙর সরাতেই দেখা যায় ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় এক কিশোরী পড়ে রয়েছে। তার মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ধর্ষণের প্রমাণ মেলে।

ধর্ষণের অভিযোগে মহেন্দ্র সিং নামে এক স্থানীয় যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বয়স ৩৫ বছর। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তফসিলি জাতি, উপজাতি নিরাপত্তা আইনেও মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা কিশোরীর অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁর গোপনাঙ্গে গভীর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, গাল, থুতনিতে ক্ষত হয়ে গেছে। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল, এখন নাগপুর মেডিক্যাল কলেজে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইনদওরে ১৯ বছরের কলেজ পড়ুয়া এক তরুণীকে গণধর্ষণের পরে নির্মম ভাবে ছুরি দিয়ে কোপায় অভিযুক্তরা। নির্যাতিতা তার বয়ানে জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িত তারই প্রাক্তন প্রেমিক ও প্রেমিকের বন্ধুরা। নন্দীগ্রামে একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতিতা পুলিশে খবর দেওয়ার কথা বললে, তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে অভিযুক্তরা।
রক্তাক্ত মেয়েটি জ্ঞান হারালে তাকে বস্তায় ভরে ভাগীরথপুরা রেললাইনে ওপর ফেলে পালায় অভিযুক্তরা। জ্ঞান আসার পরে মেয়েটি চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রাই তাকে উদ্ধার করে এমওয়াই হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ইনদওরে পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক শশীকান্ত কানকানে বলেছেন, মেয়েটির শরীরে কয়েকবার ছুরি বেঁধানো হয়েছে। সারা শরীরে গভীর ক্ষত রয়েছে। মেয়েটি কোচিং ক্লাসে যাচ্ছিল। সেখান থেকে তাকে বাইকে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তদের একজনকে পাকড়াও করা হয়েছে। তাকে জেরা করা চলছে।
মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার মেয়েদের নিরাপত্তায় ‘সম্মান’ প্রচার প্রকল্প শুরু করেছে। তার মধ্যেই এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা সামনে এল। রাজ্যে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।