
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন কর্মী। সেই অভিযোগ উড়িয়ে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে। সেই মামলার শুনানিতেই তিন সদস্যের নতুন বেঞ্চ গঠন করা হলো শীর্ষ আদালতে।
সুপ্রিম কোর্টে তিন বিচারপতির বেঞ্চে নিজেকে রাখেননি প্রধান বিচারপতি গগৈ। তবে প্যানেলের মূল দায়িত্বে রয়েছেন শীর্ষ আদালতের প্রবীণতম বিচারপতি এস এ বোবদে। তাঁর নেতৃত্বেই হবে মামলার শুনানি। বেঞ্চের দু’জন বিচারপতির মধ্যে রয়েছেন বিচারপতি এনভি রামানা ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিচারপতি বোবদে বলেছেন, ‘‘সিনিয়রিটির দিক দিয়ে আমার পরেই বিচারপতি রামানা। তাই তাঁকে দ্বিতীয় বিচারপতি হিসেবে বেঞ্চে রাখা হয়েছে। আর বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেছে নেওয়া হয়েছে কারণ তিনি মহিলা।’’
যৌন হেনস্থার মামলার শুনানির জন্য শনিবার যে বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়েছিল তাতে নিজে ছিলেন প্রধান বিচারপতি। শুনানির সময় তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টাই একটা ষড়যন্ত্র। অবিশ্বাস্য, ভাবতেই পারছি না এমন একটা অভিযোগের জন্য আমাকে সাফাই দিতে হবে।’’
প্রধান বিচারপতি বিষয়টা উড়িয়ে দিলেও প্রশান্ত ভূষণ, অরুণা রায়ের মতো বেশ কিছু আইনজীবী ও সমাজকর্মী চাইছেন, গোটা বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। তাঁদের বক্তব্য, শীর্ষ আদালত প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিচার ঠিক মতো করতে না পারলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গত ১৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে প্রধান বিচারপতি গগৈর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন কর্মী। বছর পঁয়ত্রিশের ওই তরুণীর জুনিয়র কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, গত বছর আগস্ট মাসে প্রধান বিচারপতির বাড়ির অফিসে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ১০-১১ অক্টোবর তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি প্রতিবাদ করায় প্রথমে তাঁকে প্রধান বিচারপতির বাড়ির অফিস থেকে সরানো হয়, পরে ডিসেম্বর মাসে চাকরি থেকেই বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। তরুণীর কথায়, তাঁর স্বামী ও দেওর ছিলেন হেড কনস্টেবল। ২০১২ সালের এক ফৌজদারি মামলায় সাসপেন্ড করা হয় দু’জনকে। পরে তা আপসে মিটিয়ে নেওয়া হলেও সুপ্রিম কোর্টের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় প্রতিবন্ধী ওই দেওরকে।
মহিলার অভিযোগ নিয়ে যখন উত্তেজনার আবহেই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি উৎসব বইন্স জানান, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন কর্মীর হয়ে যৌন হেনস্থার মামলা লড়ার জন্য তাঁকে দেড় কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। শীর্ষ আদালত বইন্সকে এজলাসে হাজির হয়ে তাঁর বক্তব্য জানাতে বলেছে। আগামিকাল সকাল সাড়ে দশটায় এর শুনানি হবে।