
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের ভিতর বিদ্রোহের আগুন দেখেছিল দেশ। ২৩ জন তাবড় নেতা সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছিলেন, পূর্ণ সময়ের সভাপতি চাই।
সেই বিদ্রোহ সাময়িক ভাবে শান্ত হলেও ভিতর ভিতর যে ধিকিধিকি আগুন জ্বলছিল তা আবার দাউদাউ আকার নিয়েছে বিহার ভোটের পরে। তারমধ্যেই রবিবার বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, “আমাদের দলের পুরো কাঠামোটাই ভেঙে পড়েছে।”
বিহার ভোটের পর দশ জনপথের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন কপিল সিব্বল। আইনজীবী নেতার বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগেছিলেন লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। বহরমপুরের সাংসদ বলেন, “রাস্তা খোলা রয়েছে। না পোষালে অন্য দলে চলে যান।”
এদিন গুলাম নবি আজাদ বলেন, “অনেকে বলছেন নেতৃত্বে বদলালে আমরা বিহার জিতব, মধ্যপ্রদেশ জিতব, উত্তরপ্রদেশ জিতব। আমি সেটা মনে করি না। আমাদের সিস্টেম বদলাতে হবে।”
কংগ্রেসের সিস্টেম মানে, দল চলে গান্ধী পরিবারের নির্দেশে। এ নিয়ে যেমন পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ ওঠে তেমন লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস কর্মীর আবেগও কাজ করে। তবে সুনির্দিষ্ট করে কাশ্মীরি নেতা বলেননি যে, কোন সিস্টেমের তিনি বদল চাইছেন। প্রসঙ্গত, তিন মাস আগে যে ২৩ জন নেতা সনিয়াকে চিঠি লিখেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গুলাম নবি।
তিনি আরও বলেন, “আমি নেতাদের দোষ দিই না। নেতা হওয়া মানেই জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ব্লক, জেলা স্তরের নেতাদের সঙ্গে উপরতলার কোনও যোগাযোগ থাকে না।” গুলাম নবির কথায়, “আমাদের দলে যেই নেতা হন প্রথমে প্যাড ছাপিয়ে ফেলেন, ভিজিটিং কার্ড তৈরি করিয়ে নেন। তারপর ভাবেন কাজ শেষ। কিন্তু তখনই যে আসল কাজ শুরু এটাই তাঁরা বোঝেন না।” একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলকে সাক্ষাত্কারে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “দল কাউকে টিকিট দিল মানে সে আগে গিয়ে ফাইভস্টার হোটেল বুক করে নেন। তারপর এসি গাড়ি চড়েন। কাঁচা রাস্তার দিকে পা মাড়ান না! এভাবে কি হয় নাকি!”
গত বার যখন একের পর এক চিঠি আসতে শুরু করে সনিয়ার কাছে তখন বাধ্য হয়ে সিডব্লিউসি বৈঠক ডাকতে হয় কংগ্রেস সভানেত্রীকে। সেই সভাতেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, আর ছমাস। তার মধ্যে দলকে নতুন সভাপতি খুঁজে নিতে হবে। তিনি আর দায়িত্ব সামলাতে পারবেন না। তার অন্যতম কারণ সনিয়ার শারীরিক অবস্থা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চিকিত্সকরা সনিয়া গান্ধীকে পরামর্শ দিয়েছেন, দূষণে ভরা দিল্লি থেকে অন্যত্র গিয়ে থাকতে। সেই ছমাসের মেয়াদ শেষের সময় যত এগিয়ে আসছে তত দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের ভিতর বিক্ষোভও বাড়ছে।