
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট- বালটিস্তানকে কেন্দ্র করে ফের ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক তরজা। একদিকে যখন এই এলাকাকে প্রদেশের মর্যাদা দিতে চাইছে পাকিস্তান, অন্যদিকে তখন ইমরান খান সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে ভারত। এই এলাকার উপর থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশ ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
রবিবার গিলগিট-বালটিস্তানকে প্রভিশনাল প্রভিন্সিয়াল স্ট্যাটাস বা প্রদেশের মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আর এই সিদ্ধান্তেই চটেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, “আমরা পাকিস্তানকে বলছি বেআইনিভাবে দখল করা এলাকাগুলি দ্রুত খালি করে দিতে।”
স্বাধীনতার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরের গিলগিট-বালটিস্তান প্রভৃতি এলাকার উপর বেআইনি কব্জা রেখেছে পাকিস্তান। চলতি বছর পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ওই এলাকাগুলিতে নির্বাচনেরও অনুমতি দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে ভারত। কিন্তু তারপরেও ইমরান সরকার জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর হবে এই নির্বাচন।
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, “জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ এবং পাকিস্তানের অধিকারে থাকা গিলগিট-বালটিস্তান সবই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সংবিধান অনুযায়ী ১৯৪৭ সাল থেকে এই এলাকাগুলির উপর ভারতের অধিকার রয়েছে। তাই এই এলাকাগুলিতে পাকিস্তানের বেআইনি কব্জার নিন্দা করে এসেছি আমরা। কিন্তু সম্প্রতি এই এলাকাগুলির সাংবিধানিক মর্যাদা বদল করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। আমরা পাকিস্তানের কাছে দাবি জানাচ্ছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই এলাকাগুলি খালি করে চলে যেতে।”
গত বছর ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের তরফ থেকে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়া ও তাকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের পর থেকেই আরও বেশি বিরোধিতা শুরু করেছে পাকিস্তান। এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছেও অভিযোগ করেছিল ইমরান সরকার। কিন্তু চিন ছাড়া কেউ তাদের সেই অভিযোগে কান দেয়নি।
সম্প্রতি সৌদি আরব তাদের যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে সেখানে তারা পাকিস্তানের এলাকা থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে বাদ দিয়েছে। ভারতের আবেদনের পরেই এই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে তারা। এর বদলে চলতি বছর ৫ অগস্ট পাকিস্তানের তরফে যে মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ ও গুজরাতের পশ্চিম অংশকে পাকিস্তানের এলাকা হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ৯টি প্রধান বিরোধী দল একজোট হয়েছে। ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে সাধারণ মানুষও। সেই পরিস্থিতিতে এই নতুন পদক্ষেপ মানুষের মন ঘোরানোর জন্যই করেছে ইমরান সরকার, এমনটাই ধারণা কূটনৈতিক মহলের একাংশের।