
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজ থেকে ভারতে শুরু হল কোভিড টিকাকরণ। দেশের ৩ হাজার ৬টি কেন্দ্র থেকে ৩ লাখ স্বাস্থ্যকর্মীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে প্রথম দিন। প্রথমে টিকা পাবেন দেশের ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী। এদিন টিকাকরণের সূচনায় সেই স্বাস্থ্যকর্মীদের লড়াই ও আত্মত্যাগের কথা তুলে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের আগে টিকা দিয়ে দেশ তাঁদের ঋণ শোধ করছে।
এদিন ভিডিও বার্তায় এই টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “এই কঠিন সময়ে কিছু মানুষ আমাদের আশা দেখিয়েছিলেন। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডাক্তার, নার্স, অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার, আশা কর্মী, সাফাই কর্মী, পুলিশ ও অন্যান্য ফ্রন্টলাইন কর্মীরা আমাদের বাঁচিয়েছেন। মানবিকতার জন্য নিজেদের কাজকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের পরিবার, সন্তান, বাড়ি-ঘর সবকিছু থেকে তাঁরা দিনের পর দিন দূরে থেকেছেন। কত মানুষ আর বাড়িই ফেরেননি। তাঁরা নিজেদের জীবন বলিদান দিয়েছেন। তাই আজ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথমে টিকা দিয়ে দেশ তাঁদের ঋণ শোধ করছে।”
ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গেলেও সতর্কতা না ভোলার বার্তা বারবার উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর মুখে। সেইসঙ্গে সবাইকে টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কারণ দুটি ডোজ না নিলে টিকার প্রভাব পড়বে না শরীরে। তাই বারবার সেটি মনে করিয়ে দেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি দেশের মানুষকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলেছেন দুটি ডোজের মধ্যে এক মাস ব্যবধান থাকা দরকার। তাই দ্বিতীয় ডোজ সবাই নেবেন। নইলে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা সেভাবে গড়ে উঠবে না।” তিনি আরও বলেন, “আমি সবাইকে অনুরোধ করছি প্রথম ডোজ নেওয়ার পরেও মাস্ক খুলে ফেলা কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার মতো ভুল করবেন না। কারণ দ্বিতীয় ডোজের পরেই শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, দাওয়াই নিতে হবে, সেইসঙ্গে সতর্কও থাকতে হবে।”

এই ভ্যাকসিন নিয়ে কাউকে কোনও রকমের গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া সবকিছু খতিয়ে দেখে আশ্বস্ত হওয়ার পরেই দুটি ভ্যাকসিনকে অনুমতি দিয়েছে। তাই গুজব থেকে দূরে থাকুন। আমাদের ভ্যাকসিনের বিশ্বজুড়ে চাহিদা রয়েছে। বিশ্বের ৬০ শতাংশ শিশুদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ভারতেই তৈরি হয়।”
কম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য দেশের বিজ্ঞানীদেরও প্রশংসা করেছে মোদী। তিনি বলেন, “একটা ভ্যাকসিন তৈরি করতে বছর পেরিয়ে যায়। কিন্তু এই কম সময়ের মধ্যে একটি নয়, বরং দুটি ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে ভারতে। এটাই আমাদের বিজ্ঞানীদের ক্ষমতা ও কৃতিত্বের পরিচয় দেয়।”