
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনে কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্য দলের নেতৃত্বকেই দায়ী করেছেন কিছু বিক্ষুব্ধ নেতা। এই মর্মে তাঁরা চিঠিও লিখেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে। সেই নেতাদের সঙ্গে শনিবার বৈঠক করেন সনিয়া গান্ধী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়াও। আর বৈঠকেই রাহুল জানিয়েছেন, দল যেমন চাইছে তেমন দায়িত্ব নিতে তিনি প্রস্তুত। সামনের বছর কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। তার আগে রাহুলের এই মন্তব্যে জল্পনা ছড়িয়েছে, তাহলে কি ফের একবার কংগ্রেসের দায়িত্ব নিতে দেখা যাবে তাঁকে।
এদিন ১০ জনপথে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পবন বনশল জানিয়েছেন, বৈঠকে রাহুল বলেন, “আপনারা সবাই চাইছেন বলে আমি দলের হয়ে কাজ করতে তৈরি।” কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি নাকি এও বলেছেন, বুথ স্তরে সংগঠনকে মজবুত করার জন্য আরও বেশি যোগাযোগ গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বৈঠকে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া বলেন, তৃণমূল স্তরে কর্মীদের খেয়াল রেখে নতুন করে ফের সংগঠনকে মজবুত করে গড়ে তুলতে হবে তাঁদের। বৈঠকে নাকি বিক্ষুব্ধ নেতারা কেউই রাহুলের সমালোচনা করেননি। বরং তাঁরা তাঁকে সমর্থন করেছেন বলেই জানা গিয়েছে।
উনিশের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পরে সভাপতির দায়িত্ব ছেড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তাঁর বক্তব্য ছিল গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে কেউ কংগ্রেস সভাপতি হন। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে অন্তর্বর্তী সভানেত্রীর দায়িত্ব নিতে হয় সেই সনিয়া গান্ধীকেই। কিন্তু তিনি স্বাস্থ্যের কারণে বেশিদিন এই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। তাই নতুন সভাপতি নির্বাচনের সময় এসে গিয়েছে।
শুক্রবার কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, দলের ৯৯.৯ শতাংশ নেতারা চাইছেন ফের একবার সভাপতির দায়িত্ব নেন রাহুল। কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত রাহুল নিজে নেবেন।
রাহুল নেতৃত্ব ছাড়ার পরে আরও খারাপ অবস্থা হয়েছে কংগ্রেসের। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশে সরকার পড়ে গিয়েছে। রাজস্থানেও টালমাটাল অবস্থার মধ্যে কোনও রকমে সরকার বাঁচিয়েছেন অশোক গেহলট।
গত ২৩ অগস্ট কংগ্রেসের ২৩ নেতা সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে বলেন, দলের ভাঙন রোধ করতে গেলে নেতৃত্বর আরও বেশি সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সেই চিঠি লেখার পর থেকে কংগ্রেসের মধ্যেই অনেক তাঁদের সমালোচনা করেন। এই বিষয়ে গান্ধী পরিবারের তরফেও এতদিন মুখ খোলা হয়নি। কিন্তু এবার তাঁরা সেই নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন। এখন দেখার কংগ্রেসের পরবর্তী কর্মপদ্ধতি কোনদিকে যায়।