
রেকর্ড সংক্রমণ দেশে, প্রায় ৭০ হাজার করোনা আক্রান্ত একদিনে, সুস্থতার হারও বাড়ল ৭৩%
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আজকের বুলেটিনে অনেকগুলো দিক আছে। প্রথমত, দৈনিক সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়িয়েছে। একদিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৬৫২ জন। করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। ৬ লাখ ৮৬ হাজারের কাছাকাছি।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ফের রেকর্ড ছাড়াল দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার। একদিনে মৃত্যুও হয়েছে ৯৭৭ জনের। দেশে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা পৌঁছে গেছে ২৮ লাখে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আজকের বুলেটিনে অনেকগুলো দিক আছে। প্রথমত, দৈনিক সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়িয়েছে। একদিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৬৫২ জন। করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। ৬ লাখ ৮৬ হাজারের কাছাকাছি।
দ্বিতীয়ত, বুলেটিনের ইতিবাচক দিক হল করোনায় সুস্থতার হার বেড়েছে এবং মৃত্যুহার আরও কমেছে। একদিনে ৫৮ হাজার ৭৯৪ জন করোনা রোগী সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়েছেন। দেশে এখন করোনা জয়ীদের সংখ্যা ২১ লাখ ছুঁতে চলেছে। কেন্দ্রের হিসেবে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৪ জন। সেই সঙ্গেই কোভিড রিকভারি রেট বা সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৭৩.৯১%।
তৃতীয়ত, করোনায় মৃত্যুহার আরও কমেছে। গত কয়েকদিন ধরেই স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে আশা জাগছে। মৃত্যুহার ২ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। আজকের হিসেবে কোভিড ডেথ রেট ১.৯০%। ভারতে করোনায় মৃত্যুহার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম। এর কারণ অনেক। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বক্তব্য, দেশে করোনা পরীক্ষা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোভিড চিকিৎসায় কী কী ওষুধ ব্যবহার করা হবে, কী থেরাপির প্রয়োগ হবে সেটা জানতে ক্লিনিকাল ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল তৈরি হয়েছে। কোভিড চিকিৎসা ও গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়ের খুঁটিনাটি খেয়াল রাখার জন্য তৈরি হয়েছে টাস্ক ফোর্স। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানাচ্ছে, কোভিড টেস্ট, কনট্যাক্ট ট্রেসিং ও ট্রিটমেন্ট এই তিন ‘টি’ ফর্মুলায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে দেশজুড়েই।

কোভিড পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার একটাই পয়েন্টে স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিদিন যত জন রোগীর করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যতজন রোগীর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলে কোভিড পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। কেন্দ্রের গত কয়েকদিনের হিসেবে দেখা গেছে, এই সংক্রমণের হার কখনও বেড়েছে আবার কখনও ঝপ করে কমে গেছে। গত রবিবার কোভিড পজিটিভিটি রেট কমে হয়েছিল ৭.৯%। সোমবার সেটাই ফের পৌঁছয় ৮ শতাংশের কাছাকাছি। তবে সংক্রমণের হার আর বাড়েনি। একটা পয়েন্টেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। করোনা সংক্রমণের হার তথা কোভিড পজিটিভিটি রেট যদি ১০ শতাংশের নিচে থাকে, তাহলে সেটা ইতিবাচক দিক। দেশে এখন পজিটিভিটি রেট ১০ শতাংশের কমেই আছে। সংক্রমণের হার স্থিতিশীল হওয়াও ভাল খবর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা টেস্ট আগের থেকে অনেক বেড়েছে। যত বেশি টেস্ট করা হবে আক্রান্ত রোগীদের তত দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে। যদি দেখা যায়, কোভিড পরীক্ষা অনেক বেশি হচ্ছে, কিন্তু আক্রান্তের হার বাড়ছে না একজায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে, তাহলে বুঝতে হবে সংক্রমণ ছড়ানোর হার কমেছে। সহজ কথায় বলতে গেলে, সংক্রমণ একটা গণ্ডিতেই আটকে গেছে। বেশিজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে না।
কোভিড টেস্ট আরও বেড়েছে দেশে। আইসিএমআরের হিসেবে এখনও অবধি তিন কোটির বেশি কোভিড টেস্ট হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মোট ৩ কোটি ১৭ লক্ষ ৪২ হাজার ৭৮২টি। প্রতিদিন প্রায় আট লাখের বেশি কোভিড টেস্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, এর পর থেকে প্রতিদিন ১০ লাখের বেশি নমুনা পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশের মোট ১৪৮৬টি ল্যাবরেটরিতে কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে যার মধ্যে সরকারি ল্যাবরেটরি রয়েছে ৯৭৫টি এবং বেসরকারি ল্যাব ৫১১টি। রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট হচ্ছে ৭৬২টি ল্যাবে, ট্রু্ন্যাট টেস্ট করা হচ্ছে ৬০৭টি ল্যাবরেটরিতে।