
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক মাসের উপর রাজস্থানের অশোক গেহলট সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহেরে পরে ঘরে ফিরেছেন শচীন পাইলট। জানিয়েছেন, দলের বিরুদ্ধে বা মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে কোনও খারাপ লাগা তাঁর নেই। রাজস্থান সরকারের অংশ হিসেবে আর কাজ করবেন না পাইলট। তাঁর একটাই কথা, তাঁর ঠিক কী অভিযোগ সেটা শুনে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের উচিত ছিল সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলা।
জয়পুরে ফিরে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে পাইলট বলেন, “আমি কোনও পদ চাইনি। আমি খালি একটা কথা বলেছিলাম, আমার ও আমার সমর্থনে থাকা বিধায়কদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হচ্ছে।”
সোমবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শচীন পাইলট। তারপরেই নিজের মত বদল করেন রাজস্থানের এই বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা। সূত্রের খবর, কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের তরফে তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, একটি তিন সদস্যের কমিটি তাঁর সব অভিযোগ শুনবে। এই কমিটিতে থাকবেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী নিজেও। এতদিন প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর মাধ্যমেই কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন পাইলট।
জানা গিয়েছে, তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী কিংবা রাজস্থানের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ আর ফিরিয়ে দেওয়া হবে না পাইলটকে। কিন্তু কিছুদিন পরে তাঁকে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সংগঠনে যুক্ত করা হবে। অবশ্য রাজস্থানের বিধায়ক হওয়ার সুবাদে সেখানে নিজের কাজ করে যাবেন পাইলট। তাঁর সঙ্গে বিদ্রোহ করা বিধায়কদের কয়েকজনকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা হতে পারে বলেই খবর।
গত কয়েক মাস ধরে তাঁকে রাজস্থানের রাজনীতিতে ব্রাত্য করে রাখা হচ্ছিল বলেই অভিযোগ করেছেন শচীন পাইলট। তিনি বলেন, “আপনি শুধুমাত্র বাড়ি ও গাড়ির জন্য পদ চান না। আপনাকে একটা জায়গা দেওয়া উচিত। কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। সেটা আমাকে করতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমি সেটাই দলের নেতৃত্বকে বলেছি। কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আপনার অপছন্দ হতেই পারে। কিন্তু সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করা উচিত। সেটাই হচ্ছিল না।”
মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের বিরুদ্ধে অবশ্য এখনও ক্ষোভ রয়েছে পাইলটের। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমার বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন। আমি সেগুলো নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে কাজের পরিবেশ ঠিক কেমন ছিল। কিন্তু আমার যে খারাপ লাগেনি তা নয়। আমাকে ‘নিকম্মা’, ‘নাকারা’ এসব বলা হয়েছে, যা কোনওভাবেই ঠিক কথা নয়। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে অশোক গেহলট পরিবারের কর্তা। তাঁর উচিত ছিল সবার কথা শুনে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলা। কিন্তু সেটা তিনি করেননি।”
রাজস্থানে সরকার কীভাবে চলছে সে ব্যাপারে কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানিয়েছেন পাইলট। তাঁদের তরফে যা বলা হবে সেভাবেই তিনি চলবেন। অন্যদিকে শচীন পাইলট জয়পুরে পা দেওয়ার পরেই জয়সলমীরে চলে গিয়েছেন অশোক গেহলট। এদিকে ফের একবার বিজেপি যোগের কথা অস্বীকার করেছেন ৪২ বছরের পাইলট। তাঁর দাবি, রাজস্থান তাঁর কর্মভূমি, সেখানে বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছেন তিনি। তাহলে কেন ফের কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন তিনি। এসবই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত বলেই জানিয়েছেন পাইলট।