
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজ-২০০০ যুদ্ধ বিমান থেকে ছুটে গিয়ে জঙ্গি শিবির ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল স্পাইস-২০০০ বোমা। মাত্র দেড় মিনিটের অপারেশনে এক একটি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল নিশানায় আঘাত হেনেছিল ইজরায়েলের তৈরি এই শক্তিশালী স্পাইস বোমা। লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের আবহে ইজরায়েল থেকে সেই স্পাইস মোবাই কিনতে চলেছে ভারত। ২০ কোটি ডলারের চুক্তিতে শতাধিক স্পাইস-২০০০ বোমার পাশাপাশি স্পাইক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলও কেনা হচ্ছে বলে খবর।
স্পাইস বোমা তৈরি করেছে ইজরায়েলের রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেম। এটি ইলেকট্রো-অপটিক্যাল গাইডেড বোম, আধুনিক স্যাটেলাইট গাইডেন্স সিস্টেম আছে। শত্রুদের গোপন ডেরায় অতর্কিতে হামলা চালাতে পারে। দিনে ও রাতে, আবহাওয়ার যে কোনও পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে। খুব গোপনে এই বোমা লক্ষ্যস্থির করতে পারে। উনিশ সালের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের সময় জঙ্গি শিবিরগুলির ছাদ ফুটো করে এই বোমা ফেলা হয়েছিল। শত্রুপক্ষ বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেনি।
১০০টি নিশানায় টার্গেট করতে পারে এই বোমা। ওজনে প্রায় ৯০০ কিলোগ্রাম। এর পাল্লা ৬০ কিলোমিটার। এর অর্থ হল শত্রু শিবিরের কাছাকাছি না গিয়েও এয়ারক্রাফ্ট থেকে নির্ভুল লক্ষ্যে এই বোমা ছোড়া সম্ভব। এর ১২টি কন্ট্রোল সারফেস আছে। এফ-১৫, এফ-১৬, মিরাজ-২০০০, টর্নেডো, এফএ-৫০ যুদ্ধবিমান থেকে স্পাইস বোমা নিক্ষেপ করা যায়। এর আরও দুটি ভ্যারিয়ান্ট আছে স্পাইস-১০০০ ও স্পাইস-২৫০।
ইজরায়েল থেকে স্পাইক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইলও কিনছে ভারত। এয়ার-টু-সারফেস এই মিসাইলের পাল্লা ৩২ কিলোমিটার।

প্রতিরক্ষা সূত্রে খবর, যৌথ উদ্যোগে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করতে সাব-ওয়ার্কিং গ্রুপ (SWG) তৈরি করেছে ভারত ও ইজরায়েল। সমরাস্ত্র উৎপাদন, টেকনিক্যাল সিকিউরিটি, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স ইত্যাদির সহযোগে উন্নতমানের অস্ত্র তৈরি হবে দুই দেশেই। ইজরায়েলি মাঝারি পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল (MSRAM) রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে। ইজরায়েলি অ্যারোস্পেসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই মিসাইলের প্রযুক্তিতে আধুনিকীকরণ করেছে ডিআরডিও। এই মিসাইল সিস্টেম ও তার ১৬টি ফায়ারিং ইউনিটের জন্য ইজরায়েলের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল ২০০৯ সালে। চলতি বছর এই মিসাইল সিস্টেম ভারতের হাতে আসার কথা আছে। এই মিসাইল সিস্টেমে রয়েছে কম্যান্ড ও কন্ট্রোল সিস্টেম, ট্র্যাকিং রাডার, মিসাইল ও মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম।
ইজরায়েলের তৈরি স্পাইডার কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলও আছে ভারতের হাতে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ২০০৮ সালে চুক্তি হয় ইজরায়েলের সঙ্গে। ২০১২ সাল থেকে এই মিসাইল সিস্টেম ভারতীয় বাহিনীর হাতে আসতে থাকে। ২০১৭ সালে প্রথম এই মিসাইল সিস্টেমের টেস্ট করা হয়। গতবছরও ওড়িশার চাঁদিপুরে স্পাইডার ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয়েছিল। স্পাইডার হল মাঝারি পাল্লার মোবাইল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যার নির্মাতা রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেম ও ইজরায়েল অ্যারোস্পেস ইনডাস্ট্রি। লো-লেভেল কুইক রিঅ্যাকশন মিসাইল সিস্টেম যা ভূমি থেকে আকাশে ছোড়া যায়। যে কোনও এয়ারক্রাফ্ট, হেলিকপ্টার, ড্রোনকে ঘায়েল করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।