
দ্য ওয়াল ব্যুরো: খড়কুটো পোড়ানোর ফলে দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে বায়ুদূষণের সমস্যা দেখা যায় প্রতি বছর তা মোকাবিলা করার জন্য এক সদস্যের কমিটি তৈরি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য স্থায়ী কমিটি তৈরি করা হবে। এই আশ্বাস পাওয়ার পরেই এক সদস্যের কমিটিকে বরখাস্ত করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
গত ১৬ অক্টোবর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মদন বি লোকুরকে পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে খড়কুটো পোড়ানো ও তার ফলে হওয়া বায়ুদূষণের দিকে নজর দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তখনই কেন্দ্রের তরফে এই বিষয়ে আরও একবার পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে জানান, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে আইন করে একটি স্থায়ী কমিটি নিয়োগ করা হবে। লোকুর কমিটিকে বরখাস্ত করে দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।
কেন্দ্রের এই বক্তব্যের পরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের নেওয়া উচিত। এটা জনস্বার্থ মামলার বিষয় নয়। এই দুষণের ফলে মানুষের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তাই কিছু একটা করতেই হবে।”
পরিবেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, যে স্থায়ী কমিটি তৈরি হবে তারা শুধুমাত্র খড়কুটো পোড়ানো নয়, দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় দূষণের সমস্যার দিকেও নজর দেবে। এনভাইরনমেন্ট পলিউশন (প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল) অথরিটির বদলে দায়িত্ব নেবে এই কমিটি।
এই বছর এই দূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি। কারণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এর ফলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। এই মাসেই ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল জানিয়েছে, শীতে প্রতিদিন দিলিতে অন্তত ১৫ হাজার করে নতুন আক্রান্তের খোঁজ মিলতে পারে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাতাসে কণার পরিমাণ বাড়লে তার ফলে করোনা সংক্রমণের পরিমাণও বেড়ে যায়। গত দু’দিনে দিল্লিতে ৪ হাজারের বেশি দৈনিক সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এই পরিসংখ্যানে ফের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
এর আগে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর বলেছিলেন, খড়কুটো পোড়ানোর ফলে দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাত্র চার শতাংশ দুষণ হয়। বাকিটা অন্য কারণে হয়ে থাকে। এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, “গত কিছু দিনে স্থানীয় কোনও কারণে বিশেষ কিছু বৃদ্ধি হয়নি। তাহলে দূষণ কেন বাড়ল?”
এই বাদ-বিবাদের মধ্যেই এক সদস্যের কমিটি তৈরি করার কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট। যদিও কেন্দ্রের আশ্বাসের পর তা খারিজ করা হয়েছে। এখন দেখার কত তাড়াতাড়ি নতুন কমিটি তৈরি করে কেন্দ্র।