
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে কোভিড চিকিৎসার খরচের কোনও নির্দেশিকা না দেওয়ায় তারা ইচ্ছেমতো টাকা চেয়েছে। অনেক মানুষের পক্ষেই তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আর তাই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। যদি বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে নির্দিষ্ট খরচ বেঁধে দেওয়া হত তাহলে আরও কিছু মৃত্যু আটকানো যেত বলেই মনে করে সংসদীয় কমিটি। রাজ্যসভার সাংসদ তথা সমাজবাদী পার্টি নেতা রাম গোপাল যাদবের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি সম্প্রতি এমনই রিপোর্ট দিয়েছে।
সংসদের স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন রাম গোপাল যাদব। শনিবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুকে একটি রিপোর্ট তিনি জমা দিয়েছেন যার শিরোনাম ‘আউটব্রেক অফ প্যান্ডেমিক কোভিড ১৯ অ্যান্ড ইটস ম্যানেজমেন্ট।’ এই রিপোর্টে কোভিড পরিস্থিতি সামলাতে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলেই সমালোচনা করেছেন তিনি।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট গাইডলাইন না থাকায় চিকিৎসার খরচ বেড়েছে। তার ফলে রোগীদের অনেক বেশি টাকা দিতে হয়েছে। তাই কমিটি মনে করে যদি চিকিৎসার একটা খরচ সরকার বেঁধে দিত তাহলে আরও অনেক রোগীদের মৃত্যু আটকানো যেত।
দেশের কোভিড ভ্যাকসিন এলে তা যেন গরিব মানুষ কম দামে পায় সেদিকে দেখার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে এই কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কমিটির তরফে সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন সেরাম ইন্সটিটিউট ও অন্যান্য ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে জোট বাঁধে, যাতে কম দামে সাধারণ মানুষের কাছে এই ভ্যাকসিন পোঁছতে পারে। দেশের গরিব সম্প্রদায় বিশেষ করে গ্রামে থাকা কিংবা শহরের বসতি এলাকায় থাকা মানুষদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের দামে ভর্তুকি দেওয়ার আবেদন করেছে কমিটি। ভ্যাকসিন কম থাকলে যেন কালো বাজারি না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে সংসদের এই স্ট্যান্ডিং কমিটির তরফে।

করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি পর্যাপ্ত নয় বলেই নিজেদের রিপোর্টে জানিয়েছে এই কমিটি। একটি প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালগুলিতে বেডের অভাবের কথা মাথায় রেখে কমিটি জানাচ্ছে আইসিইউ বেড ও ভেন্টিলেশন সাপোর্ট কম থাকার ফলে সংক্রমণ মোকাবিলায় যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল তা কাজে পরিণত হয়নি।
রাজ্যসভার এই প্যানেল জানিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়লেও হাসপাতালে বেডের অবস্থা দিন দিন ভয়ঙ্কর হচ্ছে। তার ফলে অনেক হাসপাতাল রোগীদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। ফাঁকা বেডের অভাব নিউ নরম্যাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই তাঁদের বক্তব্য।
শুধু তাই নয় ভারতের মতো দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবায় আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করারও দাবি জানিয়েছে এই কমিটি। তাদের তরফে বলা হয়েছে, কমিটি সরকারকে আবেদন করছে মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবায় বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বাড়াতে। আগামী দু’বছর জিডিপির অন্তত ২.৫ শতাংশ জাতীয় স্বাস্থ্য পরিকল্পনার খাতে খরচ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা করা উচিত নয় বলেই দাবি তাদের।