
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিপদ কাটেনি চামোলির। উত্তরাখণ্ডে যোশীমঠে ফের হড়পা বানের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে ফের ভয়ঙ্কর জলস্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে সবকিছু। এমন সম্ভাবনার কথাই বলেছেন বিজ্ঞানী, পরিবেশবিদরা। তাই আগে থেকেই সতর্ক হচ্ছেন আইটিবিপি, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও এসডিআরএফের জওয়ানরা।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি হড়পা বানে ভেসে যায় চামোলি। হিমবাহ ভাঙা জলস্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় দুটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রকেও। প্রবল জলস্রোতে ঋষিগঙ্গা নদীর গতিপথে একটি কৃত্রিম হ্রদ তৈরি হয়ে যায়। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, চামোলি জেলার পাহাড়ি উপত্যকায় যেখানে তুষারধস নেমেছিল সেই এলাকাতেই ঋষিগঙ্গা নদীর গতিপথে নুড়ি, পাথরের দেওয়ার তৈরি হয়ে একটি কৃত্রিম হ্রদ তৈরি হয়েছে। এই হ্রদের কারণে নদীর প্রবাহ বাধা পাচ্ছে। প্রবল চাপের মুখে দেওয়াল ভেঙে ভয়ঙ্কর জলরাশি যে কোনও সময় পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসতে পারে। ফের হড়পা বানে ভাসতে পারে চামোলির গ্রাম।
First team to reach at lake: Indo-Tibetan Border Police (ITBP) team reached murenda where a natural lake is formed after recent floods in #Chamoli, Uttarakhand. The team established the base camp, selected location for Helipad. Another team with DRDO team to reach soon.#Himveers pic.twitter.com/JHldvqrW5F
— ITBP (@ITBP_official) February 17, 2021
পাহাড়ি ধস নেমে তৈরি ওই কৃত্রিম হ্রদ এখন বিপজ্জনক অবস্থায় আছে বলে জানা গিয়েছে। এসডিআরএফের কম্যান্ডান্ট নভনীত ভুল্লার বলেছেন, পাহাড়ি ধস নেমে নদীর গতিপথের একটি অংশ আবদ্ধ হয়ে কৃত্রিম হ্রদের চেহারা নিয়েছে। জলরাশিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে দেওয়াল। এই হ্রদই দ্বিতীয়বার বিপর্যয় ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ হ্রদের চারপাশের দেওয়ালে অলকানন্দা জলপ্রবাহের ভয়ানক চাপ পড়ছে। দেওয়ালেও ফাটল ধরতে পারে। এই বিপর্যয় এড়ানোর জন্য হ্রদের মুখ প্রায় ১৫ ফুট চওড়া করার চেষ্টা করছেন জওয়ানরা। কম্যান্ডান্ট নভনীত বলছেন, হ্রদের মুখ চওড়া হলে জলের চাপ কমবে। এরপরে হ্রদের জল ধীরে ধীরে বের করে আনার চেষ্টা করা হবে।

ডিআরডিও-র গবেষকরা বলছেন, ঋষিগঙ্গা নদীর জল পুষ্ট হয় রনতী নদীর প্রবাহে। রনতী হল পাহাড়ি খরস্রোতা নদী। প্রচণ্ড তার স্রোত। এই দুই নদীর মিলিত জলধারা তপোবন জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এখন তুষারধসের কারণে ঋষিগঙ্গা নদীর গতিপথে ওই হ্রদ তৈরি হওয়ায় জলের প্রবাহ বাধা পাচ্ছে। তার ওপর রনতী নদীর প্রবল জলস্রোতও ধাক্কা খাচ্ছে। দ্বিতীয়বার বিপর্যয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
হড়পা বানে ভেসে যাওয়া ৬৮ জন শ্রমিকের দেহ এখনও অবধি উদ্ধার করা গিয়েছে। নিখোঁজ আরও ১৩৬ জন। এই নিখোঁজ শ্রমিকদের মৃত বলে ঘোষণা করতে পারে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ি সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে পড়াদের খোঁজ এখনও চালাচ্ছেন সেনা জওয়ানরা। তবে সুড়ঙ্গের ভেতরে এতদিন ধরে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।