
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পঞ্চাশেরও বেশি শিশুর উপর যৌন নির্যাতন চালানোর অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের সরকারি দফতরের এক জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন চালিয়ে সেসব ছবি ও ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে জেরা করে আরও মারাত্মক সব খবর সামনে এল।
সিবিআইয়ের অফিসাররা বলছেন, বিকৃত মানসিকতার ওই যুবকের নাম রাম ভবন সিং। উত্তরপ্রদেশ সরকারের সেচ দফতরের জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার। গত দশ বছর ধরে এই জঘন্য অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল সে। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। কখনও দিল্লি, কখনও জয়পুর বা গুজরাটে শিশুদের ধরে এনে যৌন নির্যাতন চালাত। ভিডিও করে তা দিয়ে নীল ছবিও তৈরি হত। পাঁচ বছর থেকে ষোলো বছর বয়সীরা ছিল তার নিশানায়।
মোবাইল ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের লোভ দেখিয়ে পথশিশুদের তুলে এনে নির্যাতন চালাত অভিযুক্ত। তদন্তকারীরা বলছেন, বান্দা, চিত্রকূট, হামিরপুর এলাকার পথশিশুদের ধরে আনত রাম ভবন। তাদের অভিভাবকরা কেউ দিনমজুর, কেউ কুলি, সাফাইকর্মী বা ছোটখাটো দোকানের কর্মচারী। বান্দার বাসিন্দা রাম ভবন কর্মসূত্রে গত ১১ বছর ধরে চিত্রকূটে দুটো ঘর ভাড়া নিয়ে ছিল। সেখানেই শিশুদের ধরে আনত সে। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, একটি ঘরে ঠাসা ছিল চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ভিডিও, ছবি। নানা রকম সেক্স টয় ও অন্যান্য আপত্তিকর জিনিসপত্রও উদ্ধার হয়েছে রাম ভবনের ফ্ল্যাট থেকে।
তদন্তকারী অফিসাররা বলেছেন, অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। আটটি মোবাইল ফোন, আট লাখ টাকার বেশি নগদ, সেক্স টয়, ল্যাপটপ, অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট উদ্ধার হয়েছে তার বাড়ি থেকে। বিপুল পরিমাণ চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ মেটিরিয়াল উদ্ধার করেছেন অফিসাররা। অভিযুক্তের ল্যাপটপ ঘেঁটে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের ৬৬টি ভিডিও ও ৬০০-র বেশি ছবি পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, শিশুদের যৌন নির্যাতন করে সে ছবি বা ভিডিও তুলে রাখত অভিযুক্ত। তারপর সেগুলো অনলাইনে বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি সাইটে বিক্রি করত। শিশুদের নিয়ে নীল ছবি বানানোর একটি চক্রও জড়িত রয়েছে বলে অনুমান গোয়েন্দা অফিসারদের।
জেরায় রাম ভবন জানিয়েছে, যে সব শিশুরা খুব সহজেই মোবাইল বা গ্যাজেট দেখে লোভে পড়ে যেত তাদেরই ভুলিয়ে ভালিয়ে ধরে আনত সে। গরিব পরিবারগুলির মুখ টাকা দিয়ে বন্ধ করে দিত। তাছাড়া প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিত। একেই অভাব, তার উপর ভয় আর লজ্জার কারণে পুলিশের কাছে যাওয়ার সাহস পেত না গরিব বাবা-মায়েরা। এইভাবেই গত দশ বছর ধরে এমন ভয়ঙ্কর অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল সে।
সিবিআই জানিয়েছে, পকসো আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবনের সাজা পাবে অভিযুক্ত।