
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেবে। ত্বকের ক্ষতি করবে না। কেন্দ্রের বায়োটেকনোলজি বিভাগের উদ্যোগে নতুন রকম অ্যান্টিভাইরাল ফেস-মাস্ক আনছে আদিত্য বিড়লা গ্রুপের জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ভ্যান হিউসেন। জীবাণুনাশক এই মাস্ক ভাইরাস থেকে ৯৯ শতাংশ সুরক্ষা দেবে বলে দাবি করেছে এই ফ্যাশন সংস্থা।
ভ্যান হিউসেন ব্র্যান্ড ভারতে বেশ জনপ্রিয়। জি৯৯+ স্ট্যান্ডার্ডের এই ফেস মাস্ক বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ভ্যান হিউসেন। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঠিক কী ধরনের ফেস মাস্ক পরা উচিত সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা মতামত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শুরুতে সার্জিকাল মাস্ক পরার নিদান দিলেও পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে সিন্থেটিক সার্জিকাল মাস্কের তুলনায় তিন স্তরের ফ্যাব্রিক বা সুতির মাস্কই বেশী উপযোগী। সম্প্রতি ভারত সরকার এন-৯৫ ফেস মাস্ক ব্যবহারে সতর্ক করেছে। বলা হয়েছে, রেসপিরেটারি ভালভ লাগানো এন-৯৫ ফেস মাস্কের ব্যবহার সঠিকভাবে না হলে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বেশি থাকে। তাহলে কী ধরনের মাস্ক পরা দরকার সেই নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে। ভ্যান হিউসেন জানাচ্ছে, তাদের তৈরি মাস্ক ত্রিস্তরীয় নয়, আবার সার্জিক্যাল মাস্কের মতোও নয়। পুরোপুরি জীবাণুনাশক পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে এই মাস্ক। ভাইরাল স্ট্রেন মাস্কের কাপড়ের উপরে বেশিক্ষণ টিকে থাকতেই পারবে না।
ইনস্টেম অ্যান্টিভাইরাল প্রযুক্তিতে মাস্ক বানিয়েছে ভ্যান হিউসেন
মাস্কের কাপড় এমনভাবে তৈরি হয়েছে যাতে ভাইরাল স্ট্রেন জমে থাকতে না পারে। ভ্যান হিউসেন জানাচ্ছে, সাধারণ কাপড়ের মাস্ক, সার্জিক্যাল মাস্ক বা এন৯৫ মাস্কেও ভাইরাস সাত দিন অবধি বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু এই মাস্কে তেমনটা হবে না। কারণ মাস্কের কাপড় তৈরি হয়েছে অ্যান্টিভাইরাল উপাদানে। ইনস্টেম জার্মিসাইডাল ফ্যাব্রিক টেকনোলজিতে তৈরি হয়েছে এই মাস্ক। সেটা কেমন? মুখ বা নাক থেকে বের হওয়া জলকণা বা রেসপিরেটারি ড্রপলেটে ভেসে ভাইরাল স্ট্রেন এই মাস্কের সংস্পর্শে এলে নষ্ট হয়ে যাবে। কম করেও ৫ মিনিটে জীবাণুনাশ করতে পারবে এই মাস্কের উপাদান। ১৫ মিনিটের মধ্যে ৯৯ শতাংশ সুরক্ষা পাওয়া যাবে বলে দাবি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনস্থ বায়োটেকনোলজি বিভাগের ‘স্টেম সেল সায়েন্স অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন’ রিসার্চ সেন্টারের সহযোগিতায় এই মাস্ক তৈরি করেছে ভ্যান হিউসেন। আরও একটি কালার থ্রেড নামে আরও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সংস্থা সাহায্য করেছে। এই কালার থ্রেড ‘সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার প্ল্যাটফর্মের’ (সি-ক্যাম্প) অধীনে রয়েছে।
ভ্যান হিউসেন ফ্যাশন ব্র্যান্ডের তরফে জানানো হয়েছে, এই মাস্ক পুনর্ব্যবহারযোগ্য। ৩০ বার কেচে, ধুয়ে পরা যাবে। মাস্কের উপাদান এমনভাবে তৈরি হয়েছে যাতে ত্বকের কোনও ক্ষতি করবে না। ল্যাবরেটরিতে বার বার পরীক্ষা করে সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। দুটি মাস্কের দাম পড়বে ৩৯৯ টাকা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই জানিয়েছে, ফ্যাব্রিক মাস্ক (নন-মেডিক্যাল) যদি ব্যবহার করা যায় সেটা সার্জিকাল মাস্কের থেকে অনেক ভাল। কারণ মসৃণ সারফেসে ভাইরাস ড্রপলেট জমে থাকতে পারে। কোনও পদার্থ বা সারফেস যত মসৃণ হবে, ড্রপলেট জমে থাকার সম্ভাবনা তত বেশি। ফ্যাব্রিক মাস্কে ওয়াটারপ্রুফ পলিপ্রপিলিনের স্তর থাকে যাকে ভেদ করে ভাইরাল স্ট্রেন ঢুকতে পারে না। এই ধরনের মাস্ক পুনর্ব্যবহারের সুবিধা আছে। আর ফ্যাব্রিক মাস্ক যদি অ্যান্টিভাইরাল প্রযুক্তিতে তৈরি হয় তাহলে তার ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। ভ্যান হিউসেনের মাস্ক সেভাবেই বানানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।