
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজস্থানে ডামাডোল এখনও চলছে। শচীন পাইলটের ভবিষ্যতের সঙ্গে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের ভবিষ্যৎও প্রশ্নের মুখে। এই অবস্থায় ময়দানে অবতীর্ণ হতে চলেছেন বিজেপি নেত্রী তথা রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। সূত্রের খবর, বুধবার মরু শহরে বিজেপির বৈঠকে থাকবেন রাজে। শচীন বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন তিনি।
কংগ্রেসের তরফে মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ‘বিদ্রোহী’ শচীন পাইলটকে নিয়ে দল কী ভাবছে। তাঁকে রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। দলের এই সিদ্ধান্তের পরেই শচীন বলেছেন, সত্যকে কিছুক্ষণ দাবিয়ে রাখা যায়, কিন্তু শেষ করা যায় না। শেষ পর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়।
এতদিন রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্দরের এই ডামাডোল নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি বিজেপি। ধীরে চলো নীতি নিয়েছিল তারা। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে শচীনকে সরিয়ে দেওয়ার পর অবশেষে তারা ময়দানে নামতে পারে বলেই সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, বুধবারই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা। আর সেক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন রাজে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে নানা কারণে বিবাদ হলেও রাজস্থানে এখনও বিজেপির সবথেকে বড় মুখ বসুন্ধরা রাজেই। ২০০৩ সালে তাঁর হাত ধরেই মরু শহরে প্রথমবার ক্ষমতা দখল করেছিল গেরুয়া শিবির। ২০০ আসনের মধ্যে ১২০ আসন পেয়েছিল বিজেপি। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে জননেত্রী হয়ে উঠেছিলেন রাজে। ২০১৮ সালে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তৎকালীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে বিবাদ হয় বসুন্ধরার। তার ফলও মেলে। নির্বাচনে হারে বিজেপি। কিন্তু এখনও রাজস্থানের ৭৫ বিজেপি বিধায়কের মধ্যে ৪৫ বিধায়কের সমর্থন বসুন্ধরা রাজের দিকেই রয়েছে।
সূত্রের খবর, দিল্লি যাওয়ার পর থেকে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে শচীন পাইলটের। কিন্তু এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ, শচীন পরিষ্কার করে দিয়েছেন রাজ্যের শীর্ষপদ ছাড়া কিছুই তাঁর পছন্দ নয়। তাই এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ৬৭ বছরের বসুন্ধরার বক্তব্য জেনে নিতে চাইছে বিজেপি।
গত তিনদিন রাজস্থানের বাইরে ছিলেন বসুন্ধরা। বুধবার তাঁর বৈঠকে যোগ দিতে সেখানে যাওয়ার কথা। অন্যদিকে বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশে মঙ্গলবারই রাজস্থানে গিয়েছেন দলের বর্ষীয়ান নেতা ওম মাথুর। বুধবারের বৈঠকে তাঁরও থাকার কথা। শুধু পাইলটের ভবিষ্যৎ নয়, কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিজেপি শিবিরের দাবি, রাজস্থানে এই মুহূর্তে কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই অনাস্থার ডাক দিতে পারে বিরোধীরা। এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। এটা প্রমাণ করার একমাত্র উপায় আস্থাভোট। আমরা দাবি জানাব, আস্থাভোটে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করুক অশোক গেহলট সরকার। এটা পরিষ্কার যে তারা তা পারবে না। তাই এখন চাপে রয়েছে কংগ্রেস।”
এখন দেখার এদিন বিজেপির বৈঠকের পরে গেরুয়া শিবিরের তরফে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।