
দুবাই ও ব্রিটেন ফেরতদের থেকে সবচেয়ে বেশি করোনা ছড়িয়েছে ভারতে, আইআইটির গবেষণায় দাবি
‘ট্রাভেল মেডিসিন’ নামে একটি জার্নালে এই গবেষণার রিপোর্ট সামনে এসেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন রাজ্যের করোনা আক্রান্তদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস খতিয়ে দেখে জানা গেছে, বেশিরভাগ রোগীই দুবাই বা ব্রিটেন থেকে সংক্রমণ নিয়েই দেশে ফিরেছিলেন।
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতে সর্বাধিক করোনা সংক্রমণ এসেছে দুবাই এবং ব্রিটেন থেকে। নতুন সমীক্ষায় দাবি করলেন মান্ডির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা।
‘ট্রাভেল মেডিসিন’ নামে একটি জার্নালে এই গবেষণার রিপোর্ট সামনে এসেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন রাজ্যের করোনা আক্রান্তদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস খতিয়ে দেখে জানা গেছে, বেশিরভাগ রোগীই দুবাই বা ব্রিটেন থেকে সংক্রমণ নিয়েই দেশে ফিরেছিলেন। তাঁদের সংস্পর্শে এসে ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বহুজনের মধ্যে ছড়িয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওই গত চার মাসে দুবাই থেকে অন্তত ১৪৪ জন ও ব্রিটেন থেকে ৬৪ জন ভারতীয় করোনা সংক্রমণ নিয়ে দেশে ঢুকেছিলেন। তাছাড়া কয়েকজন বিদেশি নাগরিকের থেকেও সংক্রমণ স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল বলেও দাবি করা হয় ওই রিপোর্টে।
আইআইটির অধ্যাপক সারিতা আজাদ বলেছেন, বিদেশ ফেরত রোগীরা তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কেরল, রাজস্থানের মতো নানা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের থেকে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে অনেকের মধ্যেই। সারিতার দাবি, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও অন্ধ্রপ্রদেশে বরং সংক্রমণ ছড়ানোর হার কম, বদলে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, রাজস্থান, কেরল, জম্মু-কাশ্মীর ও কর্নাটকে লোকাল ট্রান্সমিশনের হার বেশি।
দেশে প্রথম ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ায় কেরলে। ইতালি ফেরত তিন সদস্যের এক পরিবার থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল কেরলের পাথানামথিট্টা জেলায়। ধীরে ধীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল গোটা জেলায়, সেখান থেকে গোটা রাজ্যে। মার্চের শুরুতে ওই পরিবারের সংস্পর্শে আসা প্রায় ৯০০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছিল। সারিতা জানাচ্ছেন, এরপরে দুবাই ও ব্রিটেন ফেরত বহু পরিবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। একটা সময় ব্রিটেনে যখন কোভিড সংক্রমণের কার্ভ শীর্ষে ছিল, ভারতে তখন সংক্রমণ ছিল নামমাত্র। মার্চের পর থেকেই এখ ধাক্কায় কোভিড গ্রাফ বাড়তে শুরু করে। লোকাল ট্রান্সমিশন বেড়ে যায় বিভিন্ন রাজ্যেই।
আইআইটির গবেষকের দাবি, ৩০ জানুয়ারি থেকে ৬ এপ্রিল অবধি কভিড আক্রান্তদের ট্রাভেল হিস্ট্রি খতিয়ে দেখলেই দেশে সংক্রমণের হার সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা হবে। সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছিল সেই সময়তেই। যদিও তখন করোনা পরীক্ষা ও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের সুস্পষ্ট গাইডলাইন তৈরি হয়নি। যদি ওই সময় কনট্যাক্ট ট্রেসিং বেশি করা হত তাহলে দেখা যেত, সংক্রমণ কীভাবে একজনের থেকে অন্যজনের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
দেশে এখন ভাইরাস সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। আজ সকাল অবধি কেন্দ্রের পরিসংখ্যাণে মারাঠা রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৭৫৭ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ হাজার ৭৬১ জনের। রাজ্যে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।