
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ‘বিশ্বের সেরা মা’-এর খেতাব পাচ্ছেন এক সিঙ্গল ফাদার। পুণের আদিত্য তিওয়ারি। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার আদিত্য চাকরি করতেন পুণেরই একটি আইটি ফার্মে। ২০১৬ সালে দত্তক নেন এক পুত্রসন্তানকে। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিল ওই শিশু। পরিচিত অনেকেই আদত্যকে বারণ করেছিলেন এমন শিশুকে দত্তক নিতে।
তবে কারও কথাকেই পরোয়া করেননি আদিত্য। সন্তানস্নেহেই বড় করেছেন ছেলে অবনীশকে। চার বছর আগে ১ জানুয়ারিই নিজের কাছে এনেছিলেন অবনীশকে। তারপর থেকেই স্নেহ-মায়া-মমতায় আগলে রেখেছেন নিজের বুকে। অপত্য স্নেহ যে মায়ের থেকে বাবার কোনও অংশে কম নয়, প্রতিনিয়ত সেটাই বুঝিয়ে চলেছেন আদিত্য। তাঁর কথায়, “আমি মনে করি না পেরেন্টিং ব্যাপারটা লিঙ্গভিত্তিক হওয়া উচিত। কেবল একজন মা-ই সন্তানকে প্রবল অপত্যস্নেহে বড় করবেন, বাবার সেক্ষেত্রে ভূমিকা থাকবে এমনটা একেবারেই হওয়া উচিত নয়। সিঙ্গল মাদাররা যদি একইসঙ্গে শিশুর মা এবং বাবা হতে পারেন তাহলে সিঙ্গল ফাদাররা কেন নন।”
অবনীশকে দত্তক নেওয়ার পর নিজের আইটি ফার্মের চাকরিও ছেড়ে দেন আদিত্য। লক্ষ্য ছিল একটাই। যেভাবেই হোক অবনীশকে একটা সুন্দর জীবন উপহার দেওয়া। জীবনের ছোট ছোট খুশি মুহূর্তগুলো ছেলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। এইসময় প্রতিবন্ধী শিশুদের একা হাতে বড় করে তোলার বিষয়ক একটি সম্মেলনে অংশ নিতে রাষ্ট্রসংঘেও আমন্ত্রণ জানানো হয় আদিত্য তিওয়ারিকে।
আদিত্য সবসময়ি বলে থাকেন, “আমার আর অবনীশের যাত্রা শুরু হয়েছে চার বছর আগে। আমার ছেলে আমার জীবনের সেরা উপহার। ওকে পেয়ে আমি ধন্য। আমি আলাদা করে ওর বাবা বা মা হতে চাই না। ওর বন্ধু হয়েই থাকতে চাই। আর ওর কাছের একজন ভাল মানুষ হতে চাই।”
আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই সেরা মায়ের খেতাব পাচ্ছেন আদিত্য। ভীষণ খুশি তিনি। বলছেন, “অবনীশ এসে আমার জীবন বদলে দিয়েছে। অনেক কিছু শিখিয়েছে আমায়। কীভাবে একজন অভিভাবক হতে হয়, সন্তানের দেখভাল করতে হয়—-সেই সব আমার ছেলের দৌলতেই শিখেছি আমি। আমি ভাগ্যবান যে অবনীশ আমায় ওর জীবনে মেনে নিয়েছে। একজন মা শুরু সন্তানের খেয়াল রাখবেন—-এই চিরাচরিত প্রথাটা ভাঙতে চেয়েছিলাম। প্রতিপদে আমায় সাহায্য করেছে আমার ছেলে অবনীশ।”