
বিরল রোগে অকালে জীবনযুদ্ধে হেরেই গেলেন প্রশান্ত ডোরা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতের নামী প্রাক্তন গোলরক্ষক প্রশান্ত ডোরার জীবনাবসান ঘটল মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে। কলকাতার তিন প্রধানে খেলা এই গোলরক্ষক বিরল রোগ দুরারোগ্য হেমোফাগোসিটিসি লিম্ফহিস্টিওসাইটোসিস (এইচএলএইচ) আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর
শারীরিক অবস্থা অতি সঙ্কটজনক ছিল গত এক মাস ধরে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৪, তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী সৌমি ও এক পুত্রকে। প্রশান্তর দাদা হেমন্ত ডোরাও নামী প্রাক্তন গোলরক্ষক ছিলেন।
টাটা মেমোরিয়াল রিসার্চ সেন্টারে চিকিৎসা চলছিল প্রশান্তর। শেষমেশ জীবনযুদ্ধে হার মানলেন তিনি। দাদা ময়দানের আরও এক বিখ্যাত গোলরক্ষক হেমন্ত ডোরার বক্তব্য, ‘‘ভাইয়ের প্লেটলেট দ্রুত নেমে গিয়েছিল। O+ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন ছিল, তাও আমরা দিয়েছিলাম, কিন্তু শেষরক্ষা হল না।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে যে, আড়াই মাস আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রশান্ত। তারপর থেকে ক্রমেই কমতে থাকে প্লেটলেট। চিকিৎসকরা প্রথমে রোগ ধরতে না পারলেও পরে দেখা যায়, প্রাক্তন জাতীয় গোলরক্ষক প্রশান্ত ডোরা আক্রান্ত হয়েছেন এইচএলএইচ রোগে।
খেলোয়াড়ি জীবনে গোলপোস্টের নীচে তিনি ছিলেন অতন্দ্রপ্রহরী। দলের হয়ে বাঁচিয়েছেন বহু গোল। প্রশান্ত ডোরা খেলেছেন কলকাতার তিন প্রধানেই। তার আগে অবশ্য তিনি খেলেছিলেন কলকাতা টালিগঞ্জ অগ্রগামী এবং ক্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্টেও। ১৯৯৯ সালে ভারতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন প্রশান্ত।
উল্লেখ্য, বিখ্যা্ত এই গোলরক্ষক বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফি খেলেছেন। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান হয়ে জেসিটিতেও সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। প্রি-অলিম্পিক কোয়ালিফাইং-এর ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক হয়। পরবর্তীকালে সাফ কাপ, সাফ গেমসেও দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। খেলতে খেলতে প্রশান্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কে চাকরি পান। খেলা ছাড়ার পর ছোটদের কোচিং করাচ্ছিলেন।
তিনি আগে থাকতেন বৈদ্যবাটিতে, তারপর চলে আসেন দমদম নাগেরবাজারের ফ্ল্যাটে। প্রথমে প্রশান্তকে দমদমের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে হয়, তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আমরিতেও। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় রোগটা ঠিক কি তা কোনও ডাক্তার ধরতে পারেনি। পরে দেখা যায় প্রশান্ত HLH রোগে আক্রান্ত। প্রশান্তর বৌদি সোমা ডোরাও মঙ্গলবার দুপূরে হাসপাতাল থেকেই বলেছেন, অনেক কষ্ট করেও আমরা বাঁচাতে পারলাম ওঁকে, ও নিজেও খুব কষ্ট পেয়েছে।