
মেসি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিজের কালো অধ্যায়ের কথা টানলেন মারাদোনা
মেসি বিতর্কের জেরেই নিজের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বার্সেলোনা প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তোমিউ। বলা হচ্ছে, মেসি নিয়ে অহেতুক জলঘোলা করতে গিয়েই তিনি বাকি সদস্যদের কাছে চক্ষুশূল হয়ে গিয়েছিলেন।
দ্য ওয়াল ব্যুরো : জন্মদিনের সন্ধিক্ষণে লিওনেল মেসিকে নিয়ে তিনি কিছু বলবেন, আন্দাজ করেই ছিল ফুটবল দুনিয়া। সেটাই ঘটল, জন্মদিনের শেষ প্রহরে দিয়েগো মারাদোনা মুখ খুললেন মেসিকে নিয়ে। এমনকি মেসি ও বার্সেলোনা বিতর্কের বিষয়ে তিনি নিজের অতীতের কথাও টেনে এনেছেন।
মেসি বিতর্কের জেরেই নিজের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বার্সেলোনা প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তোমিউ। বলা হচ্ছে, মেসি নিয়ে অহেতুক জলঘোলা করতে গিয়েই তিনি বাকি সদস্যদের কাছে চক্ষুশূল হয়ে গিয়েছিলেন।
সেইসময় মারাদোনা নিশ্চুপ থাকলেও এতদিন পরে সেই ঘটনা নিয়ে জানিয়েছেন, লিওর সঙ্গে ওরকম ব্যবহার করা উচিত হয়নি বার্সেলোনার। আর্জেন্টিনার নামী দৈনিক ক্লারিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবন্ত কিংবদন্তি জানিয়েছেন, ‘‘আমি জানতাম লিওর সঙ্গে এরকম ব্যবহারই করবে বার্সেলোনা। আমার সঙ্গেও ওরা এমনই করেছিল। আমাকে অপমান করেছিল বার্সা। আমি সেসব ভুলে যাইনি।’’
মারাদোনা আরও বলেছেন, ‘‘আমি জানতাম, ওই অধ্যায় বাজেভাবে শেষ হবে। আমি ভেবেছিলাম লিও চলে যাবে। আমার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। বার্সেলোনা কোনও সহজ ক্লাব নয়। মেসি অনেক বছর ধরে সেখানে আছে। তার সঙ্গে তারা তেমন আচরণ করেনি, যতটা তার প্রাপ্য। লিও তাদের সব কিছু দিয়েছে। তাদের সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে গেছে। আর যেদিন লিও ক্লাব ছাড়তে চাইল, সেদিন মুখের ওপর ‘না’ বলে দিল, এটা অন্যায়।’’
নাপোলিতে থাকাকালীন নিজের অভিজ্ঞতার কথাও ভাগ করে নিয়েছেন ফুটবল জাদুকর। মারাদোনা বলেছেন, ‘‘আমার ক্ষেত্রেও নাপোলিতে এমনটাই হয়েছিল। দীর্ঘদিন কোথাও থাকলে তারা নিজেদের সুবিধার্থে ওই ব্যক্তিকে তাদের মতো ব্যবহার করতে চায়।’’
ওই ঘটনা বলেছেন স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে, ‘‘সেবার মার্শেই দ্বিগুণ বেতন দিতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তখন আমি নাপোলিতে। ক্লাব প্রেসিডেন্টকে বললাম, আমাকে যেতে দিন অন্য ক্লাবে। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন, আমরা যদি উয়েফা কাপ জিতি তাহলে তিনি আমাকে যেতে দেবেন। আমরা সেবছর উয়েফা কাপ জিতেছিলাম। আমি প্রেসিডেন্টের অফিসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে জানতে চাইলাম, এবার কী আমি যেতে পারি। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তুমি কোথায় যাবে? ফুটবল খেলতে হলে এখানেই থাকতে হবে, আমাকে উনি যেতে দেননি অন্য ক্লাবে।’’
এদিকে ফুটবলের কারণেই তাঁর যে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি, সেই কথা বলতে গিয়ে মারাদোনা জানিয়েছেন, আমি যদি ফুটবল না খেলতাম, কে আমাকে চিনতো? পাশাপাশি নিজের আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, মাদকের প্রতি আকৃষ্ট না হলে আরও বেশি ম্যাচ খেলতে পারতেন তিনি।
ফুটবলের ‘চে গুয়েভারা’ বলেছেন, ‘‘ফুটবল আমাকে সবকিছু দিয়েছে। যা আমি হয়তো কখনও কল্পনাও করিনি। আমি যদি মাদকাসক্ত না থাকতাম, তাহলে আরও অনেক বেশি ম্যাচ খেলতে পারতাম। তবে এগুলো এখন সব অতীত, আমি ভাল আছি। তবে সবচেয়ে বেশি দুঃখ হয়, আমার পাশে এখন বাবা-মা নেই।’’