
শীতের শহর থেকে জাঁকজমকহীন শিল্ড পাড়ি দিল কাশ্মীরে
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নমো নমো করে এবারের মতো আইএফএ শিল্ড শেষ হয়ে গেল। কবে টুর্নামেন্ট শুরু হল, কবেই বা শেষ হল অনেকেই জানে না। নিভৃতে, নিঃশব্দে জাঁকজমকহীন শিল্ডে চ্যাম্পিয়ন হল রিয়াল কাশ্মীর। তারা শনিবার ফাইনাল ম্যাচে জর্জ টেলিগ্রাফকে ২-১ গোলে হারিয়ে খেতাব পেয়েছে।
এই শিল্ড মানেই সোনালি ইতিহাস ভারতীয় ফুটবলে। ১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ডে ব্রিটিশ দল ইস্ট ইয়র্ককে হারিয়ে মোহনবাগান ট্রফি জয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাধীনতার প্রথম পদক্ষেপ ঘোষণা করেছিল। তারপর বহু স্মৃতিবিজরিত ঘটনা ঘটে গিয়েছে শিল্ডে। এই ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টে নামী বিদেশী দলের পদচারনা ঘটেছে। ব্রাজিলের পামেইরাস এসেছিল একবার, পাখতাকোর দল খেলে গিয়েছিল। ইরানের পাস ক্লাব খেলে একবার।
সেই টুর্নামেন্টকে জৌলুষহীন করতে করতে আইএফএ কর্তারা ছোট করে এনেছেন। করোনাভাইরাসের সময়ে সবই যখন হচ্ছে, সেইসময় নামী দলগুলিকে কেন আনা গেল না, সেই প্রশ্ন থাকছে। সবচেয়ে বড় কথা, মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের জুনিয়র দলকে খেলানোর অনুমতি দেওয়া হলেও টুর্নামেন্ট চাকচিক্য থাকত। তাও করেননি আইএফএ সচিব।
এদিন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম্যাচের ৩৬ মিনিটে লুকম্যানের গোলে এগিয়ে যায় কাশ্মীর। যদিও দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই ম্যাচে ফিরে আসে জর্জ টেলিগ্রাফ। ৪৮ মিনিটে গৌতম দাস সমতায় ফেরান জর্জ টেলিগ্রাফকে। যদিও জর্জের এই আনন্দ স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ম্যাটসন রবসনের গোলে ৫৯ মিনিটে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় কাশ্মীর। এরপরে অবশ্য গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে কলকাতার ক্লাবটি। ৭৮ মিনিটে পেনাল্টি পায় তারা। বিবেক সিংকে পেনাল্টি বক্সে ফাউল করেন রবসন। রেফারি প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় পেনাল্টি দিতে কোনও ভুল করেননি।

৭৯ মিনিটে পেনাল্টি মিস করেন তন্ময় ঘোষ। সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ মিসের পরও হাল ছেড়ে দেয়নি জর্জ। ৮৮ মিনিটে বিবেক সিংয়ের ক্রস থেকে তন্ময় ঘোষের একটি হাফভলি নষ্ট হয়েছিল। প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন রিয়াল কাশ্মীরের মিঠুন সামন্ত।
চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে কাশ্মীরের দলটি পেয়েছে ৩ লক্ষ টাকা। রানার্স দল হিসাবে সন্তুষ্ট থেকে জর্জ টেলিগ্রাফ পেয়েছে ২ লক্ষ টাকার পুরস্কারমূল্য। তাছাড়াও তারা ফেয়ার প্লে-র জন্য পেয়েছে ‘রনি রায় মেমোরিয়াল ট্রফি’।
১২ দলের এই প্রতিযোগিতায় প্রয়াত চিত্র সাংবাদিক রনি রায়কে বিশেষ সম্মান জানানো হয়েছে। তাঁর নামে দেওয়া হয়েছে ফেয়ার প্লে ট্রফি। বিশিষ্ট এই চিত্রসাংবাদিক রণজয় ‘রনি’ রায় মাত্র ৫৭ বছর বয়সে ২০২০-র ২৪ এপ্রিল মৃত্যু হয়। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তিনি কলকাতার নামী সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
তাছাড়াও তাছাড়াও সেরা কোচ হয়ে জর্জ টেলিগ্রাফ কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য পেয়েছেন পিকে ব্যানার্জি মেমোরিয়াল ট্রফি। চুনী গোস্বামী মেমোরিয়াল ট্রফি টুর্নামেন্টের সেরা হয়ে পেয়েছেন রিয়াল কাশ্মীরের ম্যাটসন রবার্টসন। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোল স্কোরার হয়ে কৃশানু দে মেমোরিয়াল ট্রফি পেয়েছেন কাশ্মীরের লুকম্যান।