
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লকডাউন শুরু হওয়ার আগে থেকেই কমেছিল ট্রেনের সংখ্যা। লকডাউনের ফলে সারা দেশে যাত্রিবাহী ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। পরে দূরপাল্লার ট্রেন চালু হলেও এখনও শুরু হয়নি লোকাল ট্রেন চলাচল। ফলে তিন মাস ধরে রোজগার হারিয়ে সমস্যায় ট্রেনের ফেরিওয়ালারা।
শিয়ালদহ বনগাঁ ও শিয়ালদহ হাসনাবাদ শাখায় দিনে চল্লিশ জোড়া ট্রেন চলত লকডাউনের আগে। এইসব ট্রেনে ফেরি করে সংসার চালাতেন মোটামুটি ৩৭ হাজার হকার। অনেকের আবার রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে দোকান আছে। খবরের কাগজ থেকে তালাচাবি, গৃহস্থালির জিনিস, প্রসাধনী, নানা ধরনের মুখরোচক খাবার, ফল, গামছা, হজমি, ঠান্ডা ও গরম পানীয় – নানা জিনিস তাঁরা বিক্রি করেন। প্রায় তিন মাস কোনও লোকাল ট্রেন না চলায় রেলস্টেশন, প্লাটফর্ম চত্বর থেকে ট্রেন – হকারি সম্পূর্ণ বন্ধ। কেউ কেউ বিকল্প পথে রুটি-রুজি সন্ধান করেছেন বটে কিন্তু সিংহভাগ হকার কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে। তাঁরা আর্থিক ভাবে চরম সঙ্কটে পড়েছেন। রেশনের মাধ্যমে পাওয়া চাল ডাল দিয়ে কোনও রকমে পেটের ভাত জুটলেও হাজার হাজার হকারের সংসার কার্যত অচল।
তৃণমূল সমর্থিত হকার ইউনিয়ন নেতৃত্বের হুমকি, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার লোকাল ট্রেন চালু না করলে তাঁরা বড় আন্দোলনে নামবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বারাসত রেল স্টেশনে উত্তর ২৪ পরগনা শিয়ালদহ বনগাঁ শাখা হকার্স ইউনিয়নের নেতারা বারাসত স্টেশন চত্বরে হকারদের নিয়ে একটি সভা করেন। সাধারণ হকারদের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে সেখানেই কেন্দ্রীয় সরকারের লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখার নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন হকার ইউনিয়নের নেতারা। তাঁরা রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিদের কাছে লোকাল ট্রেন চালানোর আবেদন জানাবেন যেখানে হকারির নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। হকারদের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং আংশিক দোকান খুলে রোটেশন পদ্ধতিতে সমস্ত ফেরিওয়ালাকে সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। বারাসত রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষ অবশ্য হকার সমস্যার সুরাহা কী ভাবে হবে তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। গোটা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকেই ঠেলেছেন। কারণ ট্রেন চালানো নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে।
১৫ জুন মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে তবে সংখ্যায় কম। পশ্চিমরেল জানিয়েছে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা এই ট্রেনে চাপতে পারবেন। অন্য কোনও যাত্রীকে ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে না। পরিচয়পত্র দেখিয়ে ট্রেনে উঠতে হবে। মহারাষ্ট্র সরকার কর্মীদের যে তালিকা দিয়েছে কেবলমাত্র তাঁরা এই ট্রেনে চাপতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি কেন্দ্রীয় সরকার।