
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবার সাতগাছিয়ার মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে গুন্ডা-মাফিয়া বলে মন্তব্য করেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন, ক্ষমতা থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে দেখান।
পরে তার পাল্টা জবাব দেন দিলীপবাবুও। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এতদিন তোমরা গুন্ডামি করেছ। এ বার আমার গুন্ডামিটা দেখো। দরকার হলে গুন্ডামিই করব”। তিনি এও বলেন, ডিসেম্বর মাস আসছে। বছরের শেষ মাসটাও তৃণমূলের খারাপ যাবে।
এমনিতে দিলীপবাবু যে ভাবে আকছার তাঁর বক্তৃতায় ‘ঠ্যাং ভেঙে দেব’, ‘হাত ভেঙে দেব’ টাইপের কথা অবলীলায় বলেন তা অনেকের কান সওয়া হয়ে গেছে। কারণ এতদিনে তা নিয়ে রাজ্য এবং সর্বভারতীয় স্তরে সমালোচনাও কম হয়নি। কারণ, কোনও সর্বভারতীয় সংগঠনের রাজ্য সভাপতি এ ধরনের কথা বলছে শুনলে প্রথম ধাক্কায় বিষ্মিত হওয়াই স্বাভাবিক।
তবে দিলীপ ঘনিষ্ঠরা বলেন, ব্যক্তিগতবাবু দিলীপবাবু মারকুটে নন। শরীর চর্চা করেন, লাঠি খেলা জানেন, কিন্তু কারও গায়ে কখনও হাত তোলেননি। বাস্তব হল, রাজনীতি করতে গিয়ে জেলায় জেলায় বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা যে ভাবে প্রায় রোজ শাসক দলের কর্মীদের হাতে মার খাচ্ছে, তা নিয়ে দিলীপবাবু বিচলিত। কর্মীদের মনোবল যাতে মজবুত থাকে, সে জন্যই এ সব কথা বলেন তিনি।
বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি শাসক দলের কর্মীদের হাতে বিরোধী কর্মীদের মার খাওয়ার ইতিহাস দীর্ঘ। এক সময়ে তৃণমূল এ ব্যাপারে সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করত। নানুর, নেতাই, ছোট আঙারিয়া, চমকাইতলা এ সব আধুনিক বাংলার রাজনীতিতে একেকটা অধ্যায়। এখন বিজেপি অভিযোগ করে পুরুলিয়ার বলরামপুরে তাঁদের কর্মীকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রায়ই জেলা থেকে মৃত্যু সংবাদ আসছে।
এখন কৌতূহলের ব্যাপারে হল, দিলীপবাবু কেন বলেছেন, ডিসেম্বর মাস তৃণমূলের খারাপ যাবে?
তার পুরোপুরি ব্যাখ্যা দিলীপবাবু দেননি। শুধু বলেন, তৃণমূলে এখন গৃহযুদ্ধ লেগেছে। দেখা যাক কী হয়। তবে ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা বলছেন, ডিসেম্বরে তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা, বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন।
প্রসঙ্গ আলু
বাজারে আলুর আগুন দাম নিয়ে এদিনও রাজ্যে বর্তমান সরকারের সমালোচনা করেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, আলুর দাম কোথাও কোথাও কেজি প্রতি ৫০ টাকা হয়ে গিয়েছে। আসলে সিন্ডিকেট, গরু, কয়লা থেকে টাকা আর আসছে না। সিবিআই সক্রিয় হওয়ার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই আলুর ব্যবসায়ীদের থেকে কাটমানি তোলা হচ্ছে। সে কারণেই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। দিলীপবাবুর এও অভিযোগ, ধান চাষিদের থেকেও কাটমানি তোলা হয়েছে। কুইন্টাল প্রতি চারশ পাঁচশ টাকা করে কাটমানি দিতে হয়েছে চাষীদের।
এর আগে দিলীপ ঘোষের এহেন মন্তব্যের সমালোচনা করেছিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, কেন্দ্রের কৃষি নীতির কারণেই আলু, পেঁয়াজ লাগামহীন ভাবে মজুত করেছে কালোবাজারিরা। তার জন্য দাম বেড়েছে।