
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফের একবার বন্ধ হয়ে গেল ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের নির্মীয়মান ডিসট্রিবিউশন স্টেশন প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি না মেটাতেই এই আন্দোলন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
মঙ্গলবার থেকে ভাঙড়ে শুরু হয়েছে এই আন্দোলন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, হিমঘর তৈরি, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া, বকেয়া ক্ষতিপূরণ মেটানো-সহ বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি সরকার। তাঁদের দাবি, ভাঙড়ে উৎপাদিত সবজি ও মাছের সংরক্ষণের জন্য একটি হিমঘর স্থাপনের দাবি মেনে নিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। এছাড়া বিদ্যাধরী নদীর সংস্কারও হয়নি। ভাঙড়ে জমি আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তী, শর্মিষ্ঠা চৌধুরী-সহ নয় আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় দায়ের মামলা প্রত্যাহার করার দাবিও মেনে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই দাবিও পূরণ হয়নি। এই সব দাবি মেটানোর জন্যই এই আন্দোলন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
অবশ্য আন্দোলন শুরু হওয়ার পরেই পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। ভাঙড়ের দুই নম্বর ব্লকের বিডিও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, দাবিদাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু প্রশাসনের বক্তব্যে আন্দোলন ছাড়তে নারাজ তাঁরা। যতদিন না তাঁদের দাবি পূরণ হচ্ছে ততদিন তাঁরা আন্দোলন থেকে সরবেন না বলেই জানিয়েছেন।
১৬’র বিধানসভার পরেই শুরু হয়েছিল ভাঙড়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন। জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির অধীনে আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, এই বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হলে সেখানে পরিবেশ দূষণ বাড়বে। ফলে কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি বিক্ষোভ চলাকালীন মৃত্যু হয় মফিজুল খান ও আলমগীর মোল্লা নামের দুই আন্দোলনকারীর। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। ভাঙড় ছাড়িয়ে আন্দোলন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ায় বাম-কংগ্রেস। দেড় বছর ধরে আন্দোলন চললেও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি।
এর মধ্যেই বেশ কয়েক দফা আলোচনার পরে ২০১৮ সালের ১১ অগস্ট আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার ও পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার চুক্তি হয়। সেখানেই বলা হয় ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের জায়গায় বিদ্যুৎ ডিসট্রিবিউশন সেন্টার তৈরি করা হবে। সেইসঙ্গে আন্দোলনকারীদের আরও অনেক দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। কিন্তু সেই দাবি পূরণ হয়নি এই দাবি তুলে ফের বিক্ষোভ শুরু করলেন গ্রামবাসীরা।