
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নির্বাচনের আগে ফের একবার সামনে এল ডায়েরি রহস্য। সারদা মামলায় সুদীপ্ত সেন গ্রেফতার হওয়ার পরে এক লাল ডায়েরির প্রসঙ্গ এনেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। বলা হয়েছিল সেই ডায়েরি সামনে এলে রাজনৈতিক জগতের অনেক নামই যুক্ত হবে সারদা আর্থিক দুর্নীতির মামলায়। সেই ডায়েরির হদিশ এখনও পাওয়া যায়নি। এবার ফের একবার উঠে এল এক ডায়েরির কথা। গরু পাচার কান্ডে ধৃত এনামুলেরও একটা ডায়েরি রয়েছে বলেই দাবি করেছে সিবিআই। সেই ডায়েরি সামনে এলে তাবড় তাবড় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকদের নাম সামনে চলে আসবে বলেই দাবি তাদের।
গরু পাচার কান্ডের অন্যতম মাথা এনামুল হককে গ্রেফতার করার ৩৪ দিন পরে বুধবার তাকে আসানসোলের সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ সিং এদিন জানান, এনামুলকে জেরা করার সময় একটি ডায়েরির কথা উঠে এসেছে। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকদের নাম আছে, যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। সেই ডায়েরি সামনে এলেই রাজ্যে তোলপাড় হয়ে যাবে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
এদিন আদালতে এনামুলের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী শেখর কুণ্ডু ও ফারুক রাজ্জাক। তাঁরা বলেন, জেরায় এনামুল সব রকমের সহযোগিতা করছে। তাছাড়া নিজে থেকেই পুলিশের কাছে গিয়ে ধরা দিয়েছে সে। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। ভবিষ্যতেও তদন্তের কাজে এনামুল সব রকমের সহযোগিতা করবে বলে জানান তাঁরা।
এই আবেদনের বিরোধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ সিং। তিনি আদালতের সামনে জানান, রিমান্ডে নেওয়ার সময় এনামুল সিবিআই আধিকারিকদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। যথেষ্ট প্রভাবশালী সে। তাই তাকে জামিন দিলে নিজের প্রভাব খাটিয়ে সব তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করতে পারে এনামুল। এমনকি দেশ ছেড়েও পালাতে পারে সে, এমনটাই অভিযোগ করেন রাকেশ। এনামুলকে ফের জেলা হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেন তিনি।
এনামুলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি ফের এনামুলকে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
সিবিআইয়ের তরফে আরও জানানো হয়, জেরার সময় জানা গিয়েছে দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ২৬টা অ্যাকাউন্ট রয়েছে এনামুলের। সেইসব অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচুর টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে। খবর পেয়েই সবকটি অ্যাকাউন্টই সিবিআই সিল করে দিয়েছে।
সূত্রের খবর, এনামুলকে রিমান্ডে নেওয়ার পর তাকে নিয়ে হীরাপুরে এক তৃণমূল নেতার আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল সিবিআই। এছাড়া আসানসোল এলাকায় আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চানাচ্ছে সিবিআই। তাদের আটক করতে পারলে আরও অনেক তথ্য জানা যাবে। কিন্তু এর মধ্যেই ডায়েরির কথা ওঠায় জল্পনা ছড়িয়েছে।