
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সারদা কাণ্ডের তদন্তে বারবার উঠে এসেছিল সুদীপ্ত সেনের লাল ডায়েরির কথা। তারপর গত মাসে গরু পাচার কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত এনামুলের বিরুদ্ধে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে সবুজ ডায়েরি পেশ করেছিল তদন্ত এজেন্সি। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, ওই ডায়েরিতেই কাঁচা হিসেব রাখতেন এনামুল। এবার কয়লা পাচারের তদন্তেও উঠে এল খাতা।
জানা গিয়েছে, ফেরার অনুপ মাঝি ওরফে লালার অন্তত ২৫টি খাতা হাতে পেয়েছে সিবিআই। গতকাল আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে সেসব উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।
সিবিআই বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারে, পালানোর আগে কাঁচা হিসেবের খাতা বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে রেখে গেছে। সেই খবর পেয়েই তল্লাশিতে নামেন গোয়েন্দারা। এখন কৌতূহলের বিষয় হল, ওই খাতায় কাদের নাম রয়েছে। নির্দিষ্ট করে নাম না বললেও সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, তাঁদের আত্মীয়, ইসিএলের কর্তা ও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের নাম মিলেছে লালার খাতা থেকে। যেখানে লেখা রয়েছে ২০১৫ সাল থেকে কাকে কবে কত টাকা দিয়েছিল লালা। কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেনের হিসেব ওই খাতায় রয়েছে বলে সিবিআই জানতে পেরেছে।
লালার বিরুদ্ধে গতকালই হুলিয়া জারি করেছে সিবিআই। ফেরার ঘোষণা করা হয়েছে এই ব্যবসায়ীকে। দেশের সমস্ত বিমানবন্দর, রেল স্টেশনে লালার ছবি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। আদালত অনুমতি দিয়েছে, সিবিআই চাইলে পুরুলিয়া, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, বার্নপুরে লালার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারে।
বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেছিলেন, “এনামুলের ডায়েরিতে লেখা আছে বি.এম। সবাই জানে বি.এম মানে কে!” শুভেন্দু অধিকারী থেকে দিলীপ ঘোষ সকলেই লালার সঙ্গে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন। সম্প্রতি দুর্গাপুরে গিয়ে শুভেন্দু এও বলেছেন, “আমি যখন বলেছিলাম তোলাবাজ ভাইপো তখন খুব গায়ে লেগেছিল। আর এখন বেরোচ্ছে। লালা কে, এনামুল কে, সব বেরোচ্ছে।” বিজেপি নেতা আরও বলেন, “কয়লা আর বালির টাকা ভাইপো খাবে বলেই বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার অবজার্ভার হয়েছিল।”
এখন দেখার, লালার খাতার পাতা পড়ে কোন এগোয় সিবিআই।